রহস্যময়ী নায়িকা সুচিত্রা সেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- বিনোদন ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩১ PM , আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩১ PM

উপমহাদেশের বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি ও রহস্যময়ী নায়িকা সুচিত্রা সেন। আজ তার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মহানায়িকার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ তাঁর বাড়িতে স্থাপিত প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ চন্দ্র মধু বলেন, ‘সুচিত্রা সেনকে নিয়ে আমাদের আবেগের কমতি নেই। সবার সহযোগিতায় আমরা তাঁর বাড়িটি উদ্ধার করতে পেরেছি। তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে সরকারি সহায়তায় প্রায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে সুচিত্রা সেন আজীবন নতুন প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর মনের মণিকোঠায় বেঁচে থাকবেন।’
পাবনার হিমসাগর লেনের পৈতৃক বাড়িতে ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল জন্ম নেন সুচিত্রা সেন। সেখানেই তাঁর শৈশব-কৈশোর কেটেছে। তাঁর আসল নাম রমা দাশগুপ্ত। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে সুচিত্রা সেন ছিলেন বড়। কলকাতার ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ে হয় সুচিত্রা সেনের।
বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ নামে বাংলা ছবিতে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। তবে ছবিটি মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে তাঁর অভিনীত ছবি ‘সাত নম্বর কয়েদি’ মুক্তি পায়। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত সুচিত্রা সেন বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন। বাংলা ৫৬ ও ৭টি হিন্দি মিলিয়ে মোট ৬৩টি ছবিতে নায়িকা হয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি হয়ে বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তোলেন।
সুচিত্রা সেন ছিলেন একজন রহস্যময়ী নায়িক। আশির দশকে যখন লাস্যময়ী এ নায়িকার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে তখন হঠাৎ চলে গেলেন অন্তরালে। কেউই প্রায় জানতে পারল না কারণটা। কেবল তার ছায়াসঙ্গী মহম্মদ হাসান জামান ছাড়া, যিনি ছিলেন তার মেকআপ আর্টিস্ট, হয়ে উঠেছিলেন খুব কাছের মানুষ। একদিন জামান খুব মনখারাপ ক’রে বাড়ি ফিরে স্ত্রী জামিলাকে বললেন, সুচিত্রা আর অভিনয় করবেন না, আর না-করার যে কারণটি জানিয়েছেন, সেটি শুনে চমকে ওঠার মতো। শত অনুরোধেও জামান কিন্তু কারণটি বলেননি জামিলাকে, ‘ও ঈশ্বরের দিব্যি দিয়ে বলেছিল, ওকে যেন এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন না করি’।
২০১৩ সালে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর আবার আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেন সুচিত্রা। এবং ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সুচিত্রা সেনের মৃত্যু হয়।
বাঁকা ঠোঁটের হাসিতে যে কত তরুণের হৃদস্পন্দন বাড়িয়েছেন সুচিত্রা, তা এতো দিন পরও বাঙ্গালির মুখে মুখে ফেরে। সুচিত্রা ঘাড় ঘুরে তাকালে সময়ও কি একটু করে থমকে যেতো না? যেতো। পর্দায় সুচিত্রার চোখ টলমল করে উঠলে জল গড়াতো পর্দার এপারে। তার মুগ্ধতাকে আকণ্ঠ গ্রহণ করেছে দর্শকসমাজ। সুচিত্রা এক চিরসবুজ প্রেয়সী, যার বয়স ঐ পর্দার ছবিতেই আজো স্থির হয়ে আছেন।