ডিবি হারুনের গল্পে সাইমন-ভাবনার ‘হাওরের মানিক’ ছবিটির কী হবে

হারুন
  © ফাইল ছবি

ভাতের হোলের জন্য খ্যাত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ। সিনেমার জন্য গল্প লিখেছিলেন এই ডিবিপ্রধান। পরিচালক হিসেবে সেই গল্পে সিনেমা বানাচ্ছেন ঢালিউডের অভিনেতা সাইমন সাদিক। এদিকে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। রাজনৈতিক এই পট পরিবর্তনের পর এই সিনেমা নিয়ে কথা বলতে নারাজ সিনেমাসংশ্লিষ্টরা। ছবিটির ভবিষ্যত তাহলে কী?

সাইমন নির্মিতব্য সিনেমাটির নাম ‘হাওরের মানিক’। এতে নায়কের ভূমিকায় সাইমন ও নায়িকা হিসেবে ছিলেন আশনা হাবিব ভাবনা। একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, হারুন-অর-রশিদের জীবনের গল্পই দেখানো হবে এই সিনেমায়। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু। সিনেমাটির প্রযোজক মোকারম সরদার।

এরই মধ্যে কিশোরগঞ্জে ছবির পঞ্চাশ শতাংশ শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম লটে একটি গানের শুটিংও হয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। তবে এ সিনেমা নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি আশনা হাবিব ভাবনা। তিনি বলেন, ‘ওই ছবিতে আমি কাজ করেছি, না কি করিনি, এসব নিয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। এসব বলবেন সিনেমার পরিচালক এবং প্রযোজক। এ বিষয় নিয়ে এখন কোনো কথাই বলতে চাই না। আজও একটা নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সেটা নিয়েও কিছু বলতে পারছি না। কয়েক দিনের মধ্যে হয়তো পরিচালক এবং প্রযোজনাসংস্থাই জানাবে। এসব তথ্য জানানো অভিনয়শিল্পীর কাজ নয়।’ নির্মাণাধীন ‘হাওরের মানিক’ ছবির অগ্রগতি নিয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল সাইমন সাদিকের সঙ্গেও। তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি, এমনকি এই প্রতিবেদকের খুদেবার্তার জবাবও দেননি তিনি।

‘হাওরের মানিক’ সিনেমাসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সিনেমাটির প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে এসেছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কুশলী বলেন, কয়েকদিন আগেই কিশোরগঞ্জে সিনেমার শুটিং করে এসেছি। অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। এই সিনেমায় সাইমন, ভাবনা, ফজলুর রহমান বাবু অভিনয় করছেন।

গত মে মাসে নতুন সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিলেন আশনা হাবিব ভাবনা। ‘জেনুবিয়া’ নামের ওই ছবির পরিচালক জাফর ফিরোজ। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল। ভারতের পরমব্রত চট্টপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হয় ভাবনার। মুখ থুবড়ে পড়েছিল ছবিটি। পরে ‘লাল মোরগের ঝুটি’ ছবিতেও দেখা যায় এই টিভি তারকাকে। এই ছবি নিয়েও তেমন আলোচনা শোনা যায়নি।

অন্যদিকে নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘জ্বি হুজুর’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় সাইমন সাদিকের। পরে একই নির্মাতার ‘পোড়া মন’ ছবিতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। গত বছর অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ‘লালশাড়ি’ সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। চলতি বছর ‘মায়া: দ্য লাভ’ তার অভিনীত শেষ ছবি। শাকিব খান পরবর্তী ঢালিউডে সাইমন সাদিক ছিল এক সম্ভাবনাময় নাম। এবার নির্মাতা হিসেবে অভিষেকের দ্বারপ্রান্তে এসে থমকে যেতে হবে তাকে?

প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের ছেলে সাইমন সাদিক কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক। সংগঠনটির সভাপতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেরিয়ে এসেছে তার অবৈধ সম্পদের খবর। সেসবের মধ্যে রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাসবহুল অবকাশযাপন কেন্দ্র ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’।