ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হলে দেশে রোগী হতো ২০-৩০ লাখ: তাজুল ইসলাম

ডেঙ্গু
নীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হলে দেশে এখন ২০-৩০ লাখ রোগী হয়ে যেতো।

বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা’ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এ বছর সারাদেশে ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে এ মাসেই ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এক্ষেত্রে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ব্যর্থতার কথা বললে তুলনামূলকভাবে বলতে হবে। যেমন একজন মানুষ কতটুকু জ্ঞানী, তা আরেকজন মানুষের সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে। তবে আমি সফলতার দাবি করি না। সফলতার দাবি তখনই করবো, যখন একজন মানুষও আক্রান্ত হবে না, একজনেরও মৃত্যু হবে না।

‘আর ব্যর্থতার তো কারণ নেই। ব্যর্থ হলে তো এখন দেশে ২০-৩০ লাখ রোগী হয়ে যেতেন। আমরা সবাই কাজ করছি। এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভারতের চেয়েও আমরা ভালো অবস্থানে আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের ২৪ হাজার সংক্রমণ হয়েছে। এ উপমহাদেশে মশা বেড়েছে চলতি জুলাই মাসে। জুন মাসে মালয়েশিয়ায় ছিল ৪৬ হাজার। আমি তাহলে কী করে আমাদের লোকজনকে ব্যর্থ বলবো।’ যোগ করেন মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার প্রজনন পাওয়া যায়, প্রথমবার সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তা পরিষ্কার করে দিয়ে আসা হবে। দ্বিতীয়বারও একই অবস্থা হলে জরিমানা করা হবে। এরপরও তারা যদি পরিষ্কার না করে এবংবারবার এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়, নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ডেঙ্গু চিকিৎসায় ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা যায় কি না- জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনের যে হাসপাতাল রয়েছে, সেটি নতুন করে খুলে দিতে বলেছি। সেখানে ৮০০-৯০০ রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। গতবারও যখন পিক অবস্থায় চলে এসেছিল, তখন সেটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি, অর্ধশতাধিক রোগীও হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জব্দকৃত যানবাহনসহ বিভিন্ন ধরনের টায়ার-টিউবে স্প্রে করার ব্যবস্থা করতে হবে। এরই মধ্যে স্কুলগুলোতে সভা করা হয়েছে। স্কুলের আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে। নইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যব্যস্থা নেন। সব সরকারি অফিসগুলোকে আজকে চিঠি দেন। এ মিটিং রেফারেন্সে। সরকারি অফিসগুলোকেও জরিমানা করা হবে।

ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হবে কি না- জানতে চাইল মন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ তখনই ঘোষণা করা হবে, যখন মনে করবো আমরা আর পারছি না। আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি না বা কাজ করার মতো যোগ্যতা আমাদের নেই, বিষয়টা তো এমন না। জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা তখনই করা হবে, যখন দেশে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটে যাবে। যেমন- ৫০ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা ৫০ লাখ লোক মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ১৭৯২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।