দেশে ব্যবহৃত ৩৬ ধরণের অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ করছে না
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০০ PM , আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০০ PM

বাংলাদেশে ব্যবহৃত ৩৬ ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক এখন মানুষের দেহে কাজ করছে না। শরীরে ওষুধের প্রভাব কমে আসায় গত এক বছরে মারা গেছেন ২৬ হাজার মানুষ।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক ও ওই গবেষণা দলের অন্যতম ডাক্তার ফজলে রাব্বী জানান, গেল দেড় বছরে ৭২ হাজার ৬৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করেছেন। পেয়েছেন বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে কোনো কোনো জীবাণু ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আইসিইউ’র রোগীদের যেসব অ্যান্টিবায়েটিক দেয়া হয়, সেগুলো সাধারণ রোগীদের দিতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। একই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে– ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে প্রথম সারি, দ্বিতীয় সারির অ্যান্টিফাঙ্গালগুলো আর কাজ করছে না।
অ্যান্টিবায়োটিকের এমন যথেচ্ছ ব্যবহারে শুধু বাংলাদেশেই এক বছরে প্রাণ গেছে ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষের। ডা. ফজলে রাব্বী বলেন, রোগীর হয়তো ‘অনিয়ন্ত্রিত’ ডায়বেটিস রয়েছে। তার হঠাৎ ইউরিন ইনফেকশন হচ্ছে বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সে হয়তো মারা যাচ্ছে। কারও হয়তো সার্জারি হয়েছে। এরপর সার্জারির স্থলে ইনফেকশন হয়ে মারা যাচ্ছে রোগীটি।
কী হয়, যদি অকারণে কেউ অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করে বারবার?
এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের (মেডিসিন) অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের শরীরে কিছু জীবাণু ঈশ্বর প্রদত্ত। এটা ভালো জীবাণু, আমাদেরকে প্রোটেক্ট করে। অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক এই ভালো জীবাণুকে ধ্বংস করছে। ফলে যে ওষুধের আমাকে সুস্থ করার কথা ছিল, তার বদলে আমি অসুস্থ হয়ে গেলাম।
ভবিষ্যতে কী হতে পারে, যদি এভাবেই চলতে থাকে?
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য গবেষক ড. শেখ মইনুল খোকন বলেন, ফাইন্যান্সিয়ালি ইমপ্যাক্ট পড়ে। আমরা বলেছি, এখন প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে মানুষের পেছনে। এটা ২০৫০-এ গিয়ে ১০০ ট্রিলিয়ন হয়ে যাবে। ২০১৯ সালে ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এটা ২০৫০-এ গিয়ে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণ হবে।
ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, পাঁচ-দশ বছর পরে সেন্সিটিভ অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যা খুবই কমে যাবে। আমাদের ফিরে যেতে হবে প্রি পেনিসিলিনের যুগে, যখন কিছুই করার থাকবে না।-যমুনা