বিশ্ব মশা দিবস আজ

বিশ্ব মশা দিবস আজ
  © প্রতীকী ছবি

আজ ২০ আগস্ট। সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মশা দিবস। বিশ্বব্যাপী মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য প্রতিবছর ২০ আগস্ট দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৩০ সাল থেকে ‘বিশ্ব মশা দিবস’ পালিত হয়।

ব্রিটিশ চিকিৎসক রোনাল্ড রসকে সম্মান জানাতেই যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন দিবসটি পালনের সূচনা করেছিল ১৯৩০ সালে। 

বাংলাদেশে মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ফাইলেরিয়া, জিকা, ও জাপানিজ এনসেফালাইটিস উল্লেখযোগ্য।

মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য এই দিবস সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়। মশাবাহিত রোগ থেকে সাবধান হওয়ার জন্য, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এই দিনে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়। 

মশাবাহিত রোগ হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের ইতিহাসে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। উনিশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত কেউই বুঝতে পারেনি যে মশা রোগের ভেক্টর ছিল। প্রথম সাফল্য আসে ১৮৭৭ সালে যখন ব্রিটিশ ডাক্তার প্যাট্রিক ম্যানসন আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি কিউলেক্স প্রজাতির মশা মানুষের ফাইলেরিয়াল রাউন্ডওয়ার্ম বহন করতে পারে। পরবর্তী দুই দশকে তিনি এবং ফ্রান্স, ইতালি, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গবেষকরা ম্যালেরিয়াতে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন, যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং নাতিশীতোষ্ণ দেশগুলিতে একটি প্রধান ঘাতক। তারা আস্তে আস্তে মানুষ এবং মশার মধ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ এবং জীববিজ্ঞানের জটিল সমীকরণ বুঝতে শুরু করেন।

১৮৯৪ সালে, ম্যানসন ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের সম্ভাব্য ভেক্টর হিসেবে 'মশা বিষয়ক অধ্যয়ন' করতে ভারতীয় মেডিকেল সার্ভিসের মেডিকেল অফিসার রোনাল্ড রসকে রাজি করান। বছরের পর বছর নিরলস গবেষণার পর রস শেষ পর্যন্ত ১৮৯৭ সালে প্রমাণ করেন যে অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করতে পারে। তিনি তার আবিষ্কারের দিন, ২০ অগাস্ট, ১৮৯৭-কে 'মশা দিবস' বলে অভিহিত করেছিলেন। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন পরে তার আবিষ্কারের তাৎপর্য চিহ্নিত করতে ২০ অগাস্ট বিশ্ব মশা দিবসের নামকরণ করেন, যা প্রতি বছর পালিত হয়। 

অ্যানোফিলিস মশার সাথে এ জটিল যোগসূত্রটিও দেখিয়েছে যে মশার কামড় রোধ এবং মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা– ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ– ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। 

বিশ্ব মশা দিবসে জেনে নিন কোন গাছগুলো রাখলে ঘরবাড়ি মশা মুক্ত করতে সহায়তা করে 

• ঘরে টবে কয়েকটি তুলসী গাছ লাগান রাখুন, তুলসীর তীব্র ঘ্রাণের কারণে মশামশা পালাবে;

• মানুষের মতো মশা লেবু গন্ধের ভক্ত নয়। একটি লেবু গাছ লাগিয়ে রাখুন একটু বড় টবে। মশারা বাড়ি ছাড়া হবে;

• ল্যাভেন্ডারের মতো সুন্দর ফুলটিও মশা পছন্দ করে না। আর এই সুযোগটাই আমরা নিতে পারি;

• গাঁদা ফুল আমাদের ভালো লাগে, মশারা সহ্য করতে পারে না। ঘরে কয়েকটি টবে লাগিয়ে রাখুন গাঁদা ফুলের গাছ;  

• রসুনের তীব্র গন্ধ মশা তাড়াতে সাহায্য করে। বেশি করে ছাদে বা বারান্দায় রসুন গাছ লাগিয়ে রাখুন; 

• বাড়ির আশপাশে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ ও নর্দমা থাকলে মশা বেশি হবে। বাড়ির ভেতর ও বাইরে পরিষ্কার রাখুন। কোথাও পানি জমে থাকলে পরিষ্কার করুন;

• শরীরের ক্ষতি না করে নামমাত্র খরচে মশা তাড়িয়ে, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদে থাকুন;