খামেনীর ব্যাঙ্গচিত্র এঁকে ফের হুমকির মুখে শার্লি এবদো

খামেনি
বিতর্কিত চার্লি এবদো ম্যাগাজিনের একটি প্রচ্ছদ  © ফাইল ফটো

ব্যঙ্গচিত্র এঁকে ফের শিরোনামে শার্লি এবদো। ফরাসি এই কার্টুন ম্যাগাজিনের এবারের টার্গেট ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনী। 

নিজেদের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে খামেনির একাধিক বিতর্কিত কার্টুন পোস্ট করেছে ফরাসীর সাপ্তাহিক প্রত্রিকাটি। এর জের ধরেই হুমকির মুখে পড়েছে শার্লি এবদো। ইরান সরকারের তরফ থেকে বুধবার এ বিষয়ে ফ্রান্সকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। তেহরান সেই সতর্কবার্তায় বলেছে, শার্লি এবদো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে সংযত না হলে ‘পরিণতি খারাপ হবে’। অবিলম্বে এই ধরণের কার্টুন প্রত্যাহার না করলে তার ফল হবে মারাত্মক।

গত ডিসেম্বরে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল শার্লি এবদো । সম্প্রতি সেগুলি প্রকাশ করা হলে বিতর্ক শুরু হয়। মূলত আয়াতুল্লা আলী খামেনীর ব্যঙ্গচিত্র আঁকাই ছিল প্রতিযোগিতার মূল বিষয়। কে কতো ব্যঙ্গাত্মকভাবে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার কার্টুন আঁকতে পারবে, সেই পাবে পুরস্কার। ছবিগুলি প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইরানের সাম্প্রতিক হিজাব আন্দোলন এবং মহিলাদের রুখে দাঁড়ানোর ছাপ রেখেই নিজস্ব ভঙ্গিমায় খামেনীকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে শার্লি এবদোর কার্টুনগুলিতে। সেখানে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন নেতাদের ব্যাঙ্গচিত্র ছাপা হয়েছে।

এ বিষয়ে ইরানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস রোচেকে তলব করে কূটনৈতিক প্রতিবাদও জানিয়েছে দেশটি।

শার্লি এবদো প্রথম সাড়া ফেলেছিল ২০০৬ সালে। ডেনমার্কের এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি ধর্মীয় ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে তোলপাড় চলছিল তখন। শার্লি এবদো সেই ছবিটাই ফের ছাপে। এরপর ২০০৯ সালে ধর্মীয় অবমাননাকর কার্টুন ছেপে হামলার শিকার হয় শার্লি এবদো। মুসলিমদের লাগাতার প্রতিবাদের মুখেও তারা থামেনি। ২০১১ সালে আবারো ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক প্রচ্ছদ কাহিনি ছাপা হয়। জবাবে কয়েকজন মুসলমান যুবক বোমা মেরে আগুন লাগিয়েছিলেন শার্লি-র দফতরে।

এছাড়া হযরত মুহাম্মদ (স)- কে নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র প্রকাশ করায় ২০১৫ সালে আক্রমণের শিকার হয়েছিল শার্লি এবদো। এতে সম্পাদকসহ কয়েকজন নিহত হয়। এই ঘটনা তখন সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছিলো। একদিকে মুসলমানরা ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার প্রতিবাদ জানাতে থাকে, অন্যদিকে আরেকদল বাক স্বাধীনতার নাম করে শার্লি এবদোর পক্ষ নেয়।

বছর দু’য়েক আগে এক পাকিস্তানি যুবক শার্লির দফতরের সামনে দু’জনকে ছুরির আঘাতে জখম করে। ঘটনাচক্রে, সে সময়ই ২০১৫-র জঙ্গি হামলার বিচারপর্ব শুরু হয়েছিল। শার্লি এবদো ফের সেই ছবি ছেপে বিতর্কের জন্ম দেয়। সব মিলিয়ে ব্যঙ্গচিত্র বিতর্ক নতুন করে দানা বাঁধছিল ফ্রান্সে। তাতে ‘ঘি ঢালল’ খামেনিকে নিয়ে করা ব্যাঙ্গচিত্র।