রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে নেপালে সমাবেশ

নেপাল
সমাবেশের একাংশ  © সংগৃৃহীত

নেপালের প্রাক্তন রাজপরিবারের হাজার হাজার সমর্থক হিমালয়ের দেশে রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে সমাবেশ করেছে।

গতকাল বুধবার (১১ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয় বলে বার্তা সংস্থা এপি’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের সাবেক রাজপরিবারের হাজার হাজার সমর্থক বুধবার হিমালয় দেশটিতে রাজতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। এসময় তারা রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহের মূর্তির চারপাশে জড়ো হয়। নেপালের রাজা পৃথ্বী নারায়ণ ১৮ শতকে শাহ রাজবংশের সূচনা করেছিলেন। 

শাহ রাজবংশের শেষ রাজা ছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। মাওবাদী ও অন্যান্যদের আন্দোলনের মুখে ২০০৬ সালে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর ২০০৮ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং নেপাল একটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

এপি বলছে, নেপালে এখনও অনেক সমর্থক আছেন যারা রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান এবং প্রতি বছর পৃথ্বী নারায়ণের জন্মবার্ষিকীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। এর আগের কিছু সমাবেশ অবশ্য বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সহিংস রূপ নিয়েছে।

তবে বুধবারের সমাবেশটি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম নিয়ে মোতায়েন থাকা পুলিশ এই বিক্ষোভ সমাবেশের ওপর নিবিড় নজরদারি জারি রেখেছিল। এদিনের সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা পতাকা ওড়ানোর পাশাপাশি সঙ্গীত বাজানো এবং রাজতন্ত্রের প্রশংসাসূচক নানা স্লোগানও দেন।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের নেতৃত্বাধীন নেপালের নতুন সরকার সাবেক রাজা পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করে। দাহাল নেপালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করতে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে প্রাসাদ হত্যাকাণ্ডের পর জ্ঞানেন্দ্র রাজা হন। কিন্তু তিনি বেশ অজনপ্রিয় ছিলেন। এরপর রাজনৈতিক দলগুলো মাওবাদী বিদ্রোহীদের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করে এবং ২০০৬ সালে তাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য করে।

এর দুই বছর পর, পার্লামেন্ট রাজতন্ত্র বাতিলের পক্ষে ভোট দেয় এবং নেপাল একটি প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।

এদিকে সাবেক রাজা পৃথ্বী নারায়ণের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা এবং সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

নেপালের একজন অবসরপ্রাপ্ত রাজা বলছেন, “নেপালে রাজতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা একজন নির্বাহী প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঠিক আছি, তবে আমাদের একজন আনুষ্ঠানিক রাজাও দরকার।”