পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি

আবারো অশান্ত হয়ে উঠছে দার্জিলিং!

দার্জিলিং
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের একটি চিত্র   © হিন্দুস্থান টাইমস থেকে

আশির দশকে দার্জিলিংকে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে প্রথম অশান্ত ও উত্তাল হয়েছিল দার্জিলিং। এর নেতৃত্বে ছিলেন জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং। ১৯৮০ থেকে দীর্ঘ ২২ বছর কেটে গিয়ে ২৩ বছরে পড়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সমাবেশ, আলোচনা-সমালোচনা চললেও পুরোপুরি শান্তি আর ফিরে আসেনি দার্জিলিংয়ে। চলছে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন। এখন অবশ্য জিএনএলএফ শক্তিশালী নয়, শক্তিশালী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুটি অংশ। আছে গোর্খা লীগও।

তাদের নেতৃত্বে আবারো অশান্ত হয়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি জেলা দার্জিলিং। আজ শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) হঠাৎ স্থানীয় দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং আবারো পৃথক গোর্খাল্যন্ড রাজ্য গড়ার দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং এবং সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এ দাবি–সংবলিত একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন ভারতের রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বরাবর।

পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি জেলা এই দার্জিলিং। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর দার্জিলিংকে আরও স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার উদ্দেশ্যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে জিটিএ চুক্তি করেন। সেই চুক্তিবলে চলছিল দার্জিলিংয়ের প্রশাসন। কিন্তু হঠাৎ দার্জিলিংয়ে ‘গণতন্ত্র বিপন্ন, তাই গণতন্ত্র বাঁচাতে দার্জিলিং’ শিরোনামে আন্দোলন শুরু করার ডাক দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের ডাকে আজই সাড়া দিয়েছে দার্জিলিংয়ের অজয় এডওয়ার্ডের হামারো পার্টি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলে আসছেন, পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য হবে না। এ দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল এই রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয় দলও। মমতা পাহাড়বাসীর উন্নয়নের কথা ভেবে বিভিন্ন দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনেন আন্দোলনকারীদের। পাহাড়ের স্বশাসিত সংস্থা জিটিএ বা গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যানকে নিজের তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়ে এসে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দেন মমতা।

আসলে পশ্চিমবঙ্গের কোনো রাজনৈতিক দলই চায় না, দার্জিলিং বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক রাজ্যের মানচিত্র থেকে। পর্যটনশিল্প আর চা–শিল্পের ওপর নির্ভরশীল এই ছোট্ট জেলাটি। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ নেপালিভাষী।