ইরানে একাধিক ড্রোন হামলা

ড্রোন
ড্রোন হামলার পরে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ড   © সংগৃহীত

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার ভোরে বার্তা সংস্থা ইরনাকে জানিয়েছে, ইসপাহান প্রদেশে একটি সামরিক সাইটে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে এবং ইরানের সেটা প্রতিহত করেছে।

গত শনিবার (২৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, "প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্সের একটিতে (ড্রোন) ব্যবহার করে একটি ব্যর্থ হামলা চালানো হয়েছিল, ফলে একটি ভবনের ছাদে সামান্য ক্ষতি হয়েছে কিন্তু কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।"

ইসফাহান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ রেজা জান-নেসারিও টেলিভিশনে বলেছেন, "কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি", তিনি যোগ করে বলেন, "ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।"

তবে কর্তৃপক্ষ ইস্ফাহান শহরের উত্তরে টার্গেট করা সাইটের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি।

তবে অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, গতকাল শনিবার রাতে ইরানে একাধিক ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি ড্রোন ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে। বাকি ড্রোনগুলো ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। ছয়টির মধ্যে একটি ইরানের তেল স্থাপনায় হামলা করেছে। যেখানে হামলার পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।

ইরানের ইউরেনিয়াম রূপান্তর কেন্দ্র সহ এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি পরিচিত পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।

২০২১ সালের এপ্রিলে, তেহরান ঘোষণা করেছে যে তারা ইসফাহান প্রদেশের নাতাঞ্জ সাইটে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করেছে।

তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল।

ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ছয়টি বড় শক্তির মধ্যে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আলোচনার কথাবার্তা চলছিলো, যা এর সংক্ষিপ্ত নাম জিসিপিওএ দ্বারা পরিচিত। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্থান করার পর এটা স্থবির হয়ে পড়ে।

এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা। ইরান বরাবরই বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

ইরানের এই ড্রোন হামলার দায় এখনো পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। তবে ইরানের অভিযোগের আঙুল ইসরায়েলের দিকে। 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "(আক্রমণ) আমাদের স্থাপনা এবং মিশনকে প্রভাবিত করেনি...এবং এই ধরনের অন্ধ পদক্ষেপ দেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।"

ইরান গত কয়েক বছর ধরে তাদের স্থাপনায় ধারাবাহিক হামলার কথা জানিয়েছে। গত জুলাই মাসে, কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে তারা ইসরায়েলের জন্য কাজ করা কুর্দি জঙ্গিদের একটি দলকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা ইসফাহানে একটি "সংবেদনশীল" প্রতিরক্ষা স্থাপনা উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

উল্লেখ্য, তেহরানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ইরান এই অভিযোগকে অস্বীকার করে।

সূত্র: দ্য নিউজ, ডিডব্লিউ


মন্তব্য