তুরস্কে ভূমিকম্পঃ নিহত ৩৬০, গত ১০০ বছরের মধ্যে ভয়াবহ

আন্তর্জাতিক
তুরস্কে ভূমিকম্প  © সিএনএন

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিলো ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সীমান্তবর্তী দেশ সিরিয়াতেও। এরই মধ্যে দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ৩৬০। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তুরস্কের কর্তৃপক্ষ বলছে, ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন তুরস্ক ও সিরিয়ায় অনেক মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। ভূমিকম্পে উভয় দেশে অনেক ভবন ধসে পড়েছে। ধসে পড়া ভবনের ভেতরে অনেক লোক আটকে থাকতে পারেন। ফলে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা উভয় দেশের কর্মকর্তাদের।

কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তত এক শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে আঘাত হানার সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিলো এটি।

ইউএসজিএস বলছে, গত ১০০ বছরেও এত শক্তিশালী ভূমিকম্পের মুখে পড়তে হয়নি তুরস্ককে। 

তাদের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৩৯ সালে একই মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। 

জর্জিয়া টেক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক সায়েন্সেস-এর সহকারী অধ্যাপক কার্ল ল্যাং সিএনএনকে বলেছেন, যে সোমবার ভূমিকম্প আঘাত হানা এলাকাটিতে ভূমিকম্পের প্রবণতা রয়েছে।  

ল্যাং আরও বলেন, এটি একটি সিসমোজেনিক এলাকা। এখানে বড় একটা ফল্ট জোন রয়েছে। তার সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে আঘাত হানা যেকোনো ভূমিকম্পের চেয়ে আজকের ভূকিম্পটা বড় ছিল।

তিনি আরও বলেন, পৃষ্ঠে যে কম্পনটা অনুভূত হয় সেটা মূলত দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, একটি হলো কতটা শক্তি নিঃসৃত হয়েছে, অর্থাৎ ভূমিকম্পের আকার, আরকটি হলো ভূ-পৃষ্ঠের কতটা গভীরে ভূমিকম্পের উৎপত্তি। উৎপত্তি যদি পৃষ্ঠের কম গভীরে হয়, তাহলে সেটা খুবই বিপজ্জনক ভূমিকম্প হতে পারে।  

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের বাসিন্দা এরদেম পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি আমার ৪০ বছরের জীবনে এরকম ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখিনি।’ তিনি বলেন, ‘তিনটি প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে আমরা দোলনায় রাখা শিশুদের মতো দুলতে থাকি।’

এদিকে ভূমিকম্প আঘাতের পর উদ্ধারকাজে নেমেছে জরুরি বিভাগ। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিলো ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার।