বিশ্বের নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় ভারত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ০৪:২৯ PM , আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৩, ০৪:২৯ PM

ভারত একদিকে মহা আড়ম্বরে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন করছে, অন্যদিকে বিশ্বের নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায় উঠে এসেছে নরেন্দ্র মোদির দেশ। আচ্ছে দিনের ভেপু বাজানো মোদি সরকারের শাসনকাল অর্থাৎ গত দশ বছরের নানা ঘটনা ভারতকে ‘সবচেয়ে খারাপ স্বৈরতান্ত্রিক’ দেশগুলোর তালিকায় স্থান পাইয়ে দিলো।
সম্প্রতি ‘ডেফিয়েন্স ইন দ্য ফেস অফ অটোক্র্যাটাইজেশন’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে এমনই দাবি করেছে সুইডেনের ভ্যারাইটিজ অফ ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট। সেখানকার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ের মধ্যে ভারতবাসী রাজনৈতিক মেরুকরণের ঘটনাতেও নাটকীয় উত্থান দেখেছে। আর এই গোটা ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই বিঁধেছে প্রতিষ্ঠানটি। সারা বিশ্বের সামনে এই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই মুখ পুড়েছে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের।
নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলির তালিকায় ভারতের পাশাপাশি রয়েছে আফগানিস্তান, ব্রাজিল, মিয়ানমারের নামও। বছর কয়েক আগে এই ইনস্টিটিউট ভারত ‘নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রে’ পরিণত হয়েছে বলেও একটি রিপোর্টে দাবি করেছিল। এবার সুইডেনের প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত রিপোর্টে নির্বাচিত স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলির তালিকায় ভারত ১০৮তম স্থানে রয়েছে। যা মোটেই গৌরব বৃদ্ধি করল না মোদি সরকারের। সবচেয়ে দুঃখের, এই বিভাগে ভারতের স্থান হয়েছে সিঙ্গাপুর, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, তানজানিয়ার মতো দেশগুলোরও পিছনে।
১৭৮৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ২০২টি দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে গ্লোবাল ডেটাসেট তৈরি করেছে ভি-ডেম ইনস্টিটিউট। প্রায় ৪০০ বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৩১ মিলিয়নের বেশি তথ্য যাচাই করে ৩ মার্চ রিপোর্টটি প্রকাশ করে। নাম না করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও মোদির স্বৈরাচারিতাকে লক্ষ্য করে এই রিপোর্টটিতে আরো বলা হয়েছে, দেশের মানুষ রাজনৈতিক মেরুকরণে কার্যত সম্মোহিত হয়ে গণতান্ত্রিক নীতি থেকে সরে আসছেন। মেরুকরণের জেরে গত দশ বছরে ভারতে সহযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হয়ে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে স্বৈরাচারী দেশগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্যও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিডিয়া সেন্সরশিপ বৃদ্ধি এবং সুশীল সমাজের দমন, একাডেমিক স্বাধীনতা হ্রাস, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মিডিয়া সেন্সরশিপ এবং সুশীল সমাজের দমন "স্বৈরাচারী দেশগুলির শাসকরা প্রায়শই এবং সর্বাধিক মাত্রায় জড়িত"। এটি আরও দেখা গেছে যে ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া এবং উরুগুয়েতে একাডেমিক স্বাধীনতা এবং সাংস্কৃতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই সরব হয়েছে বিজেপির মিডিয়া সেল। তাদের দাবি, ওই ইনস্টিটিউটটি মার্কিন শিল্পপতি জর্জ সোরেসের টাকায় চলে। সম্প্রতি জর্জ আদানি কাণ্ডে মোদির সমালোচনা করেছিলেন। ভারতের মতোই স্বৈরতন্ত্র বেড়েছে তুরস্ক, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি, থাইল্যান্ডে। চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, গত বছরের শেষ থেকে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার (৫.৭ বিলিয়ন) ৭২ শতাংশই স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অধীনে বসবাস করছে। যা গত দশ বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে।