সুদানে সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে; নিহত বেড়ে ৫৬
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৩৯ PM , আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৩৯ PM

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। চলমান এই সংঘাতে দেশটিতে আহত হয়েছেন অন্তত ৫৯৫ জন। নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের তিন কর্মীও রয়েছেন। রবিবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই বাহিনীর লড়াই থেকে অবশ্য রাজধানী খার্তুমে বাসিন্দারা দূরে রয়েছেন এবং সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, রাষ্ট্রীয় টিভি ও সেনাবাহিনীর সদর দফতর দখলে নিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আধাসামরিক বাহিনী।
নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের তিনজন কর্মীও রয়েছেন। সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা একটি সামরিক ঘাঁটিতে গুলি বিনিময়ের সময় তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সুদানের সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে তীব্র ক্ষমতার দ্বন্দ্বই এ সংঘাতের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আল-জাজিরা বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিরোধী পক্ষকে "অবিলম্বে পূর্বশর্ত ছাড়াই শত্রুতা বন্ধ করার" আহ্বান জানালে ভয়ংকর লড়াইটি ঘটে।
এদিকে সুদানের সেনাবাহিনী এবং তার বিরোধী আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) উভয়ই দাবি করেছে, তারা রাজধানী খার্তুমের বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। যদিও এসব এলাকায় রাতভর লড়াই চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দারফুর অঞ্চলের শহরগুলোসহ সুদানের অন্যত্রও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান আরএসএফ’র ঘাঁটিতে আঘাত করছে। একইসঙ্গে শনিবার রাতে মানুষকে তাদের বাড়িতে থাকতে বলেছে দেশটির বিমান বাহিনী। তবে খার্তুমের বাসিন্দারা বিবিসিকে তাদের আতঙ্ক ও ভয়ের কথা জানিয়েছেন। একজন জানিয়েছেন, তাদের পাশের বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিল’-এর নামে দেশ পরিচালনা করছিলেন।
এই স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপরদিকে স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।
বেসামরিক সরকার গঠনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর এই বিষয়টি নিয়েই সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।
সেনাবাহিনী বলছ, আরএসএফকে দুই বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হবে। কিন্তু আরএসএফ বলছে এই একীভূতকরণের প্রক্রিয়া যেন অন্তত ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফকে একীভূত করলে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কে দেবে এ নিয়েও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।