ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে রণক্ষেত্র পাকিস্তান, জনগণের ওপর ওপেন ফায়ার

পাকিস্তান
রণক্ষেত্র পাকিস্তান  © সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেসময় প্রায় ৩শ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।  ইমরান খানের পাশাপাশি দলীয় কয়েক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন সেনা দপ্তরেও হামলা ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

কয়েকটি মামলায় জামিন নিতে মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন ইমরান খান। শুনানি শুরুর আগেই আদালত ভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্স এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো.. ন্যাব এর একটি যৌথ দল। এরপর কালো রঙের একটি গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যান তারা।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পরই পিটিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মেহমুদ কুরেশি ও সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ ওমরের ডাকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে দলীয় নেতা-কর্মীরা। রাজধানী ইসলামাবাদের পাশাপাশি লাহোর, করাচিসহ ছোটবড় প্রায় প্রতিটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। তা উপেক্ষা করে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে তারা।

পিটিআইয়ের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদরদপ্তর এবং লাহোরের একটি সেনানিবাসের ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর চালায়। পাশাপাশি পেশোয়ার ও করাচির সেনা সদরদপ্তরেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পেশোয়ারের সেনা দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয় পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা।

লাহোর সেনানিবাসে ভাঙচুরের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর লাহোর শাখার শীর্ষ কর্মকর্তার বাসভনেও হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সেসময় সামরিক বাহিনীবিরোধী বিভিন্ন ¯ শ্লোগান দেয় তারা। এছাড়া পেশোয়ারে রেডিও পাকিস্তানের একটি ভবন ও করাচিতে একটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন সেনাদপ্তর ও সেনানিবাসে বাড়তি সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা জনগণের ওপর ওপেন ফায়ার শুরু করেছে। এতে কয়েকজন হতাহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

সত্তরের দশকে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও  পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলি ভুট্টো। সেসময় তার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদেও পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ হয়। কিন্তু তার প্রভাব সামরিক বাহিনীর ওপর সরাসরি পড়েনি। দেশটির গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সেনানিবাস ও সেনা সদরদপ্তরে  হামলার ঘটনা ঘটল।


মন্তব্য