ঘূর্ণিঝড় মোখা সামান্য দুর্বল হয়ে পড়েছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর

মোখা
মায়ানমারে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডব  © সংগৃৃহীত

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানিয়েছে, রবিবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বিএমডি'র সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, 'ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র রবিবার বিকাল ৩টায় কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের স্থলভাগে অবস্থান করছে, তবে পুরো ঘূর্ণিঝড়টি আজ সন্ধ্যার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে।’

উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার কারণে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:- মিয়ানমারে মোখার আঘাত, ধসে গেল বিমানবন্দরের ভবন

এর আগে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনার নদীবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ প্লাবিত হতে পারে।

আরও পড়ুন:- ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে সেন্টমার্টিনের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত, আহত ১১

উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের কারণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মিয়ানমারের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির সেনাবাহিনীর প্রকাশ করা ছবিতে দেখা গেছে, রাখাইন রাজ্যের থানদউয়ে বিমানবন্দরে একটি ভবন ধসে পড়েছে। সেখানকার বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া প্রবল ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে পানির প্রবাহ। ইতিমধ্যে সিতওয়েতে হাঁটুপানি জমে গেছে। বাসিন্দারা জরুরি সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিভিন্ন নম্বরে।

মিয়ানমারে এখনও পর্যন্ত মোখার তাণ্ডবে ৩ জন নিহত হওয়ার খবর পওয়া গেছে। 


মন্তব্য