মার্কিন প্রতিবেদনে ভারতে সংখ্যাল'ঘু নির্যাতনের অভিযোগ: নয়াদিল্লির অস্বীকার

সংখ্যালঘু অত্যাচার
সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বন্ধের দাবিতে আন্দোলন  © সংগৃৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২০২২ সালের ‘ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম রিপোর্ট’ বা ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

মার্কিন ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের নিশানা করা হচ্ছে। ঘৃণা ভাষণের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়কে খোলাখুলি হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সহিংস ঘটনা, ধর্মস্থানে আক্রমণের অভিযোগের কথাও রয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে আরও বলা হয়েছে, গত বছর দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সাদা পোশাকে গুজরাট পুলিশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চার ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে মারধর করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গোষ্ঠী সংঘর্ষ সামনে রেখে মধ্য প্রদেশ সরকারের পুলিশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়ি ও দোকানপাট ভেঙেছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভারতের কথা সরাসরি উল্লেখ না করলেও মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর ‘ব্যাকগ্রাউন্ড ব্রিফিং’য়ে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়– যেমন খ্রিস্টান, মুসলিম, শিখ, হিন্দু দলিত এবং আদিবাসীরা যে একনাগাড়ে সুপরিকল্পিত হামলার শিকার হচ্ছেন আমরা প্রতিবেদনে সেটাই তুলে ধরেছি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গণহত্যার ডাক দেওয়া হচ্ছে, তারা গণপিটুনি ও বিদ্বেষপূর্ণ সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। ধর্মীয় উপাসনালয় ও বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে– এমনকি যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এসব হামলায় জড়িত তারা অনেক ক্ষেত্রেই পার পেয়ে যাচ্ছে।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই মূল্যায়ন এমন সময়ে প্রকাশ্যে এলো যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার প্রথম ‘রাষ্ট্রীয় সফরে’ আগামী মাসে আমেরিকায় যাবেন।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ২০২২ সালের প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে আমরা অবগত। দুঃখজনকভাবে, এই ধরনের রিপোর্ট এখনও ভুল তথ্য এবং ভুল বোঝাবুঝির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, কিছু মার্কিন কর্মকর্তাদের পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য শুধুমাত্র এই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের অংশীদারিত্বকে মূল্য দিই এবং আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলোতে খোলামেলা আদান-প্রদান অব্যাহত রাখব।’    

কিছুদিন আগে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন ‘ইউএসসিআইআরএফ’। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কাছে তাদের সুপারিশ ছিল, ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করা হোক ভারতকে। তাদের অভিযোগ, ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা গুরুতর ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। সে সময়ে মার্কিন ওই রিপোর্টকেও খারিজ করে দিয়েছিল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সূত্র: পার্স টুডে


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ