তথ্যমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা ছড়ানো ভিডিওটি সরাতে বিটিআরসিকে আদালতের নির্দেশ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ১১:৪৩ AM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৩, ১১:৪৩ AM

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দকে জড়িয়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে মানহানিকর ও বিভ্রান্তি ছড়ানো ভিডিওগুলো সরাতে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ এমরুল করিম রাশেদ গতকাল চট্টগ্রাম সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করলে বিচারক জহিরুল কবির এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদলত চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ আগস্ট।
এর আগে, একই অভিযোগে গত রবিবার (১৯ জুন) রাতে তথ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
মামলায় মানহানিকর ভিডিও প্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর ঘটনায় কানাডা প্রবাসী ‘সাইবার সন্ত্রাসী’ নাজমুস সাকিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, এইচএম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজী হারুন রশিদ। এছাড়া যারা ‘নাগরিক টিভি’র ওই ভিডিওতে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার করেছেন, সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা সাইবার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ষড়যন্ত্রকারী, হলুদ ও ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ব্যক্তি। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে কুৎসা রটনা, চরিত্রহনন ও চাঁদা দাবি করে। এটাই আসামিদের একমাত্র পেশা ও নেশা।
তারই ধারাবাহিকতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয় করতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘নাগরিক টিভি’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে নাম উল্লেখ করে ১৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উল্লিখিত ছবি সম্বলিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
মামলার বাদী এমরুল করিম রাশেদ জানান, প্রকৃত অর্থে এটা কোনো টিভি চ্যানেল নয়। এটি একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজ মাত্র। তাদের উল্লিখিত কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রকৃত ‘নাগরিক টিভি’র কর্তৃপক্ষ আসামি কর্তৃক পরিচালিত ভুয়া ও অবৈধ নামধারী ‘নাগরিক টিভি’র সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই মর্মে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রচার করেছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এপিপি নিখিল কুমার নাথ বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে কথিত দুর্নীতির ভিডিওটি প্রত্যাহারের জন্য বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানী ধার্য্য করা হয়েছে আগামী ১০ আগস্ট। বাদী পক্ষে মামলার শুনানিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ মিন্টু, আইনজীবী এমএ নাছের চৌধুরী, সুভাষ বড়ুয়া, রেহানা বেগম রানু, মোহাম্মদ দিদার, রবিউল আলম, দেলোয়ার হোসেনসহ অনেক আইনজীবী অংশ নেন।
চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মামলার বিষয়টি দেখছি। নাগরিক টিভি নামক ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলটির এডমিন নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আগেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র: বাসস