ফ্রান্সে সহিংসতা: প্রবাসী বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার আহ্বান
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৩, ০৪:২০ PM , আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৩, ০৪:৫৭ PM

ফ্রান্সের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস। রবিবার দূতাবাস থেকে জন সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ জুন প্যারিসের কাছাকাছি স্থান নস্তের শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়। এ ঘটনার পর প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে সহিংস বিক্ষোভ ও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে জানা যায় যে, অভিভাষী অধ্যুষিত এলাকা - বেজোনস, জেনিভিলিয়ার্স, গার্গেন - নেস - গোনেসে, অ্যাসিনিয়েরেস - সুর সেইন, মন্ট্রিউই, নিউলিপুর- মারুন, ফ্ল্যামাট, মিউডনসহ মার্সেই এবং রোখদো শহরে ব্যাপক দাঙ্গা, লুটতরাজ এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।
প্রায় সহস্রাধিক লোক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফ্রান্সের কোনো কোনো এলাকায় সান্ধ্য আইন জারিসহ যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সংঘাতপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে সতর্কতার সাথে চলাচলের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশি কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা বাংলাদেশি মালিকানাধীন কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ দূতাবাস প্যারিসের ই-মেইল: [email protected] এবং হটলাইন নম্বর +337534653 39 এ জরুরি ভিত্তিতে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের গুলিতে কিশোরের মৃত্যুর পর টানা পাঁচদিন ধরে বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল ফ্রান্স। ভাঙা হচ্ছে গাড়ি, ব্যবসায়িক স্থাপনা।
রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা। বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সামাজিক প্রতিবাদ ও বিশৃঙ্খলা।
যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্যারিসসহ শহরগুলোতে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্যারিসের বাইরে দক্ষিণপন্থী মেয়রের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সেখানে গাড়ি ভাঙচুর ছাড়াও বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যদিও মেয়র তখন বাড়ি ছিলেন না। কিন্তু তার স্ত্রী-সন্তানরা ছিলেন। মেয়রের স্ত্রীর পা ভেঙে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে নিহত কিশোর নাহেল মেরজুকের নানি নাদিয়া এক বিবৃতি দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, অবিলম্বে এই সহিংসতা বন্ধ হোক।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, গাড়ি, বাড়ি, স্কুল তো আপনাদের কোনো ক্ষতি করেনি। মনে রাখবেন, ওই বাসে করেই মেয়েরা স্কুলে যান।
নাদিয়া বলেছেন, নাতির হত্যায় তিনি ও তার মেয়ে বিপর্যস্ত। কিন্তু বিচারবিভাগের ওপর তাদের আস্থা আছে। তিনি ন্যায় পাবেন।
এদিকে শান্তিরক্ষার জন্য প্যারিসে সাত হাজার পুলিশ নামানো হয়েছে। বিশেষ করে শহরের কেন্দ্রস্থলে টহল বাড়ানো হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত প্যারিসে ড্রোন দিয়ে নজরদারি করেছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ রোববার মন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। তার জার্মানি সফর করার কথা ছিল। কিন্তু ফ্রান্সের এই পরিস্থিতির কারণে সফর পিছিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি, ডয়চে ভেলে, আল জাজিরা