বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ, চায় সরকার পরিবর্তন : ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি

টিভি
  © সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো এবার বাংলাদেশকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানেও। চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির অনুষ্ঠানে ওই দুই দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মতোই তুলোধুনো করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।

শুক্রবার (০৭ জুলাই) সংবাদভিত্তিক ২৪ ঘণ্টার চ্যানেল প্রেস টিভিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপটির শিরোনাম ছিল 'বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র'।

অনুষ্ঠানের একেবারে শুরুতেই উপস্থাপক যুক্তরাষ্ট্রকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, বিশ্বজুড়ে তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে নিজের স্বার্থে সরকার পরিবর্তনের ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি সংসদে উল্লেখ করেছেন এভাবে- তারা গণতন্ত্র হরণের চেষ্টা করছে। (তারা) এমন একটি সরকার আনতে চাইছে যাদের গণতান্ত্রিক ভিত্তি নেই। এমনটি করা হলে তা অগণতান্ত্রিক হবে।

প্রতিবেদনে ২০২১ সালে র‍্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং চলতি বছর গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদানকারী যেকোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, এতেই বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রোধের মাত্রাটি বোঝা যায়।

কিউবা, হাওয়াইসহ বেশকিছু ক্যারিবিয়ান দেশের সরকারকে হটানোর ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। এক্ষেত্রে দেশটি তার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র সহায়তা নেয় উল্লেখ করে বলা হয়, অন্য দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের এসব হস্তক্ষেপের নেপথ্যে বিভিন্ন বিষয় কাজ করে। দেশটি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মানবাধিকার রক্ষার নামে এসব করে থাকে। 'নেপথ্যের বিষয়গুলো'র মধ্যে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে দাবি করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন নিজ স্বার্থে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং এগুলোর ওপর হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে ওই দেশের মূল্যবান সম্পদ, বাণিজ্য রুট, কৌশলগত অবস্থানকে ব্যবহার করতে চায়। চীনের সাথে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বেজিং ঢাকার শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ চীনের বিআরআই (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে।

র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর চীন প্রকাশ্যে বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।