যুদ্ধ বন্ধে ৪০ দেশের সাথে ইউক্রেনের আলোচনা চলছে, ফল মিলবে কতটুকু?
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৫ AM , আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৫ AM

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের জেদ্দায় শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবার শুরু হওয়া বৈঠকে ইউক্রেনসহ ৪০টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছেন। যদিও দুই দিনব্যাপী বৈঠক থেকে কতটুকু ফল মিলবে তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষকরা।
বৈঠকটি ইউক্রেনের কূটনৈতিক চাপের অংশ। পশ্চিমা মিত্র ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর থেকে যুদ্ধ বন্ধে সমর্থন পেতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা আশা করছে, জেদ্দায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ প্রায় ৪০টি দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে একমত হবে। তবে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি রাশিয়াকে।
ফোরামটি রাশিয়াকে বাদ দিলেও ক্রেমলিন বলেছে, তারা বৈঠকের ওপর নজর রাখবে। তবে রাশিয়া না থাকলেও বৈঠকে রয়েছে তাদের অন্যতম মিত্র দেশ চীন।
শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অফিসের প্রধান এবং বৈঠকের প্রধান দূত আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, 'আমি জানি বৈঠকটি কঠিন হবে, কিন্তু আমাদের পেছনে শুধু সত্য ও মঙ্গলের বারতা। আমাদের মধ্য অনেক মতবিরোধ ও অবস্থানের ভিন্নতা রয়েছে। এরপরও এই সংকট নিয়ে আমাদের নীতি ও উত্তোরণের ভাবনা বৈঠকে তুলে ধরাই এখন মুখ্য।'
আন্দ্রি ইয়ারমাক যদিও বৈঠকের উপসংহার নিয়ে খুব একটা আশাবাদি না। তিনি বলেন, ‘সৌদিতে আলোচনা খুব সুখকর হবে না।’
সৌদি আরবের আলোচনা বিশ্বশান্তি সম্মেলনের পথ খুলে দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে এই আলোচনাকে স্বাগত জানিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আমরা যেকোনো আলোচনাকে স্বাগত জানাই। সৌদি আরব যে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে তাকে স্বাগত জানাই। তবে কেউ যদি মনে করে যে, আলোচনায় বসেই আমাদের অভিযান বন্ধ করা যাবে তাহলে তার উত্তর হলো, ‘না’।
প্রেসিডেন্ট পুতিন আগেই স্পষ্ট করেছেন, যতক্ষণ না আগ্রাসন বন্ধ হবে, ততক্ষণ অভিযান চলবে। এ বৈঠকের মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে আল জাজিরা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে মধ্য দিয়ে দেশটি তাদের সর্বসাম্প্রতিক কূটনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করতে যাচ্ছে। তবে, এই সম্মেলন থেকে কোনো কিছু অর্জনের প্রত্যাশা খুব কম।
সরকারি বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজন্সি (এসপিএ) শুক্রবার জানায়, লোহিত সাগরের উপকূলীয় নগর জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং অন্য কর্মকর্তাদের বৈঠকে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সমাধানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করবে রিয়াদ।
এই বৈঠকের আগে জুনে ইউক্রেনের আয়োজনে কোপেনহেগেনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এরপরি সৌদিতে এমন আলোচনায় বসেছে দেশগুলো। কোপেনহেগেনের আলোচনাটি ছিলো মূলত অনানুষ্ঠানিক উদ্যোগ। ওই আলোচনার পর কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব। রাশিয়ার সঙ্গে তেল নীতিমালা নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে দেশটি। যুদ্ধের উভয় পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে এই যুদ্ধ অবসানে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে সৌদি।