অস্ট্রেলিয়ার দুই সিনেটরের বক্তব্যের প্রতিবাদ অস্ট্রেলিয়া আ.লীগ ও যুবলীগের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৩, ০২:২৮ PM , আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৩, ০২:২৮ PM

অস্ট্রেলিয়ান গ্রিন পার্টির দুই সিনেটরের বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ে বক্তব্যের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রকৌশলী খালিদ বিন হাবিবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত জুন মাসে ও ২০২০-২০২১ সালের বিভিন্ন সময়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্রিন পার্টির সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ এবং জ্যানেট রাইস অস্ট্রেলিয়ান সংসদের সিনেট ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ডিফেন্স অ্যান্ড ট্রেড লেজিসলেশন কমিটি এবং ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড কমিটির কাছে বাংলাদেশ সরকার সম্পর্কে ‘ভিত্তিহীন, অশোভন ও অসম্মানজনক বক্তব্য’ পেশ করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন এবং অস্ট্রেলিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান শামীম সেই বক্তব্যের লিখিত প্রতিবাদ জানান।
গবেষণালব্ধ সাতাশ পৃষ্ঠার লিখিত এই প্রতিবাদপত্রে তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে দুই সিনেটরের বক্তব্যের অসারতা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবাদপত্রে তারা বলেন, আমাদের জানামতে এই দুজন সিনেটরের কেউই কখনো বাংলাদেশে যাননি। তারা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন দল-উপদলের সঙ্গেও তেমনভাবে সম্পৃক্ত নন। এমনকি তারা বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কেও তেমন ওয়াকিবহাল নন বলেই প্রতীয়মান হয়।
অস্ট্রেলীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও যুবলীগ সাধারণ সম্পাদকের ওই প্রতিবাদপত্রে বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যা, তিন নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যা এবং খুনিদের রক্ষার্থে ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি কিংবা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কমপক্ষে ১৯ বার হত্যাচেষ্টার মতো অসংখ্য মানবাধিকারবিরোধী ঘটনা তুলে ধরেন ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন ও নোমান শামীম। এতে তারা বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে তখন কেন কোনো কার্যকর প্রতিবাদ করা হয়নি? কেন তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনো স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি?’
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলতে গিয়ে তাঁরা যে উপাত্ত ব্যবহার করেছেন, তা অসত্য। বিএনপির অনুসারী এনজিওকর্মীরা এই অসত্য উপাত্ত সরবরাহ করেছে। যে ৬০০ লোকের গুম হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই জীবিত আছেন এবং সুস্থ আছেন। ’
প্রতিবাদপত্রে মানবাধিকার রক্ষার নামে বিভিন্ন সময়ে অসত্য তথ্য সরবরাহ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে বিশ্ব জুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো জঘন্য কাজের সঙ্গে জড়িত, সেইসবের সুদীর্ঘ তালিকা ‘অকাট্য প্রমাণসহ’ উল্লেখ করা হয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার দাবি করা হয়।
ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন ও নোমান শামীম সিনেটরদ্বয়কে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও ভালো করে জানার ও ভ্রমণে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেও অনুরোধ করেন। সবশেষে সিনেটরদ্বয়ের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ‘অস্ট্রেলিয়ার জনগণ কি একটি বিদেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে তাদেরকে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত করেছেন?’
এই প্রতিবাদপত্রের অনুলিপি অস্ট্রেলিয়ান সিনেটের সভাপতি, অস্ট্রেলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিনেটর ও সংসদ সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।