ব্রিকসে নতুন সদস্য বাড়াতে ভারত-ব্রাজিলের আপত্তি

বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষক বা সহযোগী সদস্য হিসেবে থাকার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের

ব্রিকস
ব্রিকস জোটের সদস্য ও নেতারা  © ফাইল ছবি

ব্রিকস আপাতত নতুন কোনো দেশকে সদস্যপদ দিচ্ছে না। মূলত, ভারত আর ব্রাজিলের আপত্তিতেই সম্প্রসারিত হচ্ছে না এ জোট।

ব্রিকসকে ‘রাজনৈতিক জোট’ উল্লেখ করে কূটনীতিকদের পূর্বাভাস, বিশ্ব রাজনীতি বা অর্থনীতিতে খুব বড় প্রভাব ফেলতে পারবে না ব্রিকস।

আগামী ২২ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে বসছে ব্রাজিল-রাশিয়া-ভারত-চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার জোট ব্রিকসের ১৫তম সম্মেলন। শেষ হবে ২৪ আগস্ট। এতে বাংলাদেশ, সৌদি আরব, ইরান, আরব আমিরাত ও ইান্দোনেশিয়াসহ অন্তত আটটি দেশ সদস্য পদ পাওয়ার কথা ছিল। যদিও এ দফায় তা হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারত আর ব্রাজিল বলছে যে আগে নতুন সদস্য নেয়ার একটা নতুন নিয়ম কানুন হোক। তারপর দিবে। এটা তাদের ব্যাপার।

তবে ভূরাজনৈতিক কারণে পর্যবেক্ষক বা সহযোগী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশকে জোটে থাকার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা। 

উদ্যোক্তারা বাদে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রথম সদস্য হয়েছিল বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় এ ধরনের জোটের সাথে থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন সবাই। পূর্ণাঙ্গ সদস্য না হলেও পর্যবক্ষেক বা সহযোগী হয়ে থাকার পরামর্শ তাদের।

এ প্রসঙ্গে সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই ব্লকটাতে আগ্রহ থাকবে। এটা স্বাভাবিক, এবং আমার মনে হয় আগ্রহ থাকা উচিতও। তাদের অন্যান্য যেসব উদ্যোগ সেসবে আমরা সহযোগী হিসেবে থাকতে পারি।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, কিছু ইস্যু আছে। সেগুলো সবসময় সবখানে একই রকমের গুরুত্ব পায় না। আপনি কিছু বিষয় সেখানে সহযোগী হিসেবে উত্থাপন করতে পারেন। আমার কাছে মনে হয়, সহযোগী হিসেবে থাকলেও কোনো ক্ষতি নেই।

অনেকের ধারণা, পশ্চিমা বিশ্ব তথা যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী জোট ব্রিকস। আশংকা, এটিতে গেলে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ পশ্চিমা উদ্যোগ ও দেশগুলোর সাথে দূরত্ব বাড়তে পারে ঢাকার। যদিও তা মানতে নারাজ এই অর্থনীতিবিদ।

সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, বহুমাত্রিক-জ্যামিতিক সমীকরণের যুগ এটা। এখানে একটা আরেকটার সাথে সাংঘর্ষিক বা মিউচুয়ালি ইনক্লুসিভ কি না এটা কেউ দেখে না। অর্থনৈতিক সম্পর্ক এমনভাবে করতে হবে যেনো সেটার একটা মিউচুয়াল ব্যালেন্স থাকে।

চীন-ভারত, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিশাল অংকের। তাই, এ জোট থেকে নতুন করে দিল্লি আর বেইজিং অর্থনৈতিকভাবে কতোটা লাভবান হবে, সে প্রশ্নও আছে। আর, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্বার্থের সংঘাতও বাড়তে পারে আশংকা করে ব্রিকসের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিব।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ভারতে আর চীন যদি একটা কনট্রাস্টের মধ্যে থাকে তাহলে এখানে স্বার্থের সংঘাত এসে যাবে। তাহলে ব্রিকস এমন একটা সংগঠন হয়ে দাঁড়াবে যা রাজনীতিতে বড় কোনো অবদান রাখতে পারবে না।