জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর সময়সীমা চেয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৫৮ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৪০ PM

আর্টিকেল ৩৭০ রদ করার পর জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে ভারত সরকার। এ অঞ্চলকে বিশেষ মর্যাদা থেকে সরিয়ে এনে কেন্দ্রশাসিত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। আর্টিকেল ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে করা এসব মামলার কার্যক্রমও চলছে আদালতে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) আদালত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আর কতদিন রাখা হবে? এ নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরে আর্টিকেল ৩৭০ রদের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি চলছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। শুনানিতে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নতুন এক নির্দেশ দেন।
সলিসিটর-জেনারেল তুষার কাপুরকে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, কেন্দ্রের কাছ থেকে যেন জেনে আসা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের তকমা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের কোনো ‘টাইমফ্রেম’ আছে কিনা৷ এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘রোডম্যাপ’ কী?
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি এটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়। কিন্তু অন্ধের মতো তো বসে থাকা যায় না। কেন্দ্রের উচ্চপর্যায়ের কাছে আপনারা জানতে চাইবেন, এ ব্যাপারে কোনো টাইমফ্রেম কিংবা রোডম্যাপ রয়েছে কিনা। গণতন্ত্র বলেও তো একটা ব্যাপার আছে। চার বছর হয়ে গেছে।’
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এই প্রশ্নের উত্তর দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। ওইদিন জম্মু ও কাশ্মীর বিষয়ে ‘ইতিবাচক বিবৃতি’ দেওয়া হবে বলেও সংবাদমাধ্যমটির খবরে জানানো হয়।
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের থেকে। পাশাপাশি লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছিল জম্মু-কাশ্মীরও। আজ, ৪ বছর পরই রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি জম্মু ও কাশ্মীরকে।
প্রসঙ্গত, ৩৭০ ধারার পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৫এ ধারাও প্রত্যাহার করা হয়েছিল। অনুচ্ছেদ ৩৫এ-র অধীনে ২০১৯ সালের আগে বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকতেন জম্মু ও কাশ্মীরের 'স্থায়ী' বাসিন্দারা। ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল ৩৫এ ধারা। এই আবহে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ, ৩৫এ ধারার জেরে ভারতীয় নাগরিকরা তিনটি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরে।
চন্দ্রচূড়ের মতে, ১৬(১) ধারার অধীনে দেশের সব নাগরিককে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সমান অধিকার দেওয়া হয়, তবে ৩৫এ ধারায় সেই অধিকার খর্ব হচ্ছিল। তাছাড়া ১৯(১)(এফ) ধারায় দেশের সব নাগরিককে যেকোনও জায়গায় সম্পত্তি কেনার অধিকার দেওয়া হয়, তাও খর্ব হচ্ছিল ৩৫এ ধারায়। এবং ১৯(১)(ই) ধারায় দেশের নাগরিকদের যেকোনও জায়গায় বসাবসের অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে ৩৫এ ধারায় তাও খর্ব হয়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, আনাদোলু এজেন্সি, ডন