অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে হলেও পরমাণু অস্ত্রে সমৃদ্ধ পাকিস্তান!

পাকিস্তান
  © ফাইল ছবি

অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে হলেও পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ২০২২ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে এ অস্ত্রের ভান্ডার বাড়িয়ে চলেছে দেশটি। বর্তমানে এতে ১৭০টির মতো পারমাণবিক ওয়ারহেড মজুত রয়েছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন পর্যবেক্ষক সংস্থা বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সায়েনটিস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

পাকিস্তান নিউক্লিয়ার ওয়েপনস নামে এ সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন করে আরও পারমাণবিক ওয়ারহেড বানিয়েছে পাকিস্তান। ২০২২ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করছে তারা।   
 
যদিও পাকিস্তান বরাবর দাবি করে আসছে, তাদের দেশে ২৪ থেকে ২৭টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ তথ্যই প্রকাশিত হচ্ছে। তবে এ প্রতিবেদনের লেখক ও অস্ত্র গবেষক ম্যাট কোর্দার মতে, ভারত আর পাকিস্তানের অস্ত্র ভান্ডারের বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। দুটি দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার প্রায় সমান।
 
বুলেটিন অব দ্য অ্যাটোমিক সায়েনটিস্টের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ম্যাট কোর্দা বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বাড়ানো মোটেও ভাল লক্ষণ নয়। কারণ এতে দুদেশের রেষারেষিতে এশিয়ায় যুদ্ধের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।  
 
বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাকিস্তানের পারমাণবিক কার্যক্রমের গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। বিমান বাহিনীর ঘাঁটি ও সেনাবাহিনীর কার্যক্রম পর্যালোচনা করে জানা যায়, পরমাণু কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশটি।   
 
১৯৯৯ সালে আমেরিকার ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, ২০২০ সাল নাগাদ পাকিস্তানে ৮০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড থাকবে। অথচ ধারণার চেয়েও বেশি ওয়ারহেডের মালিক এখন পাকিস্তান। এর পেছনে অন্যতম কারণ সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। এছাড়া চারটি প্লুটোনিয়াম রিঅ্যাক্টরও পেয়েছে দেশটি। এভাবে চলতে থাকলে চলতি দশকের শেষদিকে দেশটির পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা ২০০ ছাড়াবে।
 
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কাহুতা ও গাদওয়ালে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্ট রয়েছে। পাঞ্জাবের খুশবো থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণে খুশবো কমপ্লেক্সে চারটি ভারি প্লুটোনিয়ম উৎপাদন চুল্লির অবস্থান। ইসলামাবাদের পূর্বে অবস্থিত নিলোরে নিউ ল্যাবস রিপ্রসেসিং প্ল্যান্ট এবং চশমা কমপ্লেক্সেও আছে এ ওয়ারহেড।
 
এদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এশিয়ানেট বলছে, ইসলামাবাদের পশ্চিমে কালা চিত্তা দাহর পর্বতশ্রেণিতে পাকিস্তান পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমাইল লাঞ্চারের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
 
একটি স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি রয়েছে। ফতেহ জংয়ের কাছে সম্প্রসারিত জাতীয় উন্নয়ন কমপ্লেক্সে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ইসলামাবাদের উত্তর-পশ্চিমে ওয়াহের কাছে পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে। সেখানে পরমাণু অস্ত্র রাখার জন্য তৈরি হয়েছে বাঙ্কার। এছাড়া আধুনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও বানাতে শুরু করেছে দেশটি।


মন্তব্য