জাতিসংঘে ‘মধ্যপ্রাচ্যের নতুন মানচিত্র’ প্রকাশ করলো নেতানিয়াহু

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের ৭৮ তম অধিবেশনে ভাষণ দেন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেন।

ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল সৌদি আরবের সাথে একটি শান্তি তৈরির পথে রয়েছে, এর ফলে ইরানের পারমাণবিক হুমকি নির্মূল করা সম্ভব হবে।

"আমরা ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে আরও বেশি নাটকীয় এবং ঐতিহাসিক শান্তির দ্বারপ্রান্তে আছি," নেতানিয়াহু ৭৮তম সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী উচ্চ-স্তরের অধিবেশন দাঁড়িয়ে বলেছিলেন।

“এই ধরনের শান্তি আরব-ইসরায়েল দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এটি অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোকে ইসরাইলের সাথে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উৎসাহিত করবে। এটি ফিলিস্তিনিদের সাথে শান্তির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলবে,” নেতানিয়াহু বলেছেন।

"এটি ইহুদি ধর্ম ও ইসলামের মধ্যে জেরুজালেম এবং মক্কার মধ্যে ইসহাকের বংশধর এবং ইসমাইলের বংশধরদের মধ্যে একটি বিস্তৃত পুনর্মিলনকে উত্সাহিত করবে," তিনি যোগ করেছেন।

এ সময় নেতানিয়াহু ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের দুটি মানচিত্র তুলে ধরেন। 

প্রথমটি ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টির বছর ১৯৪৮ সালের একটি মানচিত্র, যেখানে রাষ্ট্রটি তার সমস্ত আরব প্রতিবেশীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছিল।

“এখানে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল। এটি একটি ক্ষুদ্র দেশ, বিচ্ছিন্ন, একটি শত্রু আরব বিশ্ব দ্বারা বেষ্টিত। আমাদের প্রথম সত্তর বছরে, আমরা মিশর এবং জর্ডানের সাথে [শুধু] শান্তি স্থাপন করেছি,” নেতানিয়াহু বলেছিলেন।

তারপরে তিনি একটি আধুনিক মানচিত্র ধরে রেখেছিলেন যা ইতিমধ্যেই ২০২০ সালে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করে, যখন ইসরায়েল মার্কিন-সমর্থিত আব্রাহাম অ্যাকর্ডের অধীনে তার চার আরব প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল, সেইসাথে সৌদি আরব সেই বৃত্তে যোগ দিলে কী ঘটতে পারে। তিনি একটি লাল মার্কার বের করেন এবং সেই দেশগুলির চারপাশে একটি বৃত্ত আঁকলেন।

“পুরো মধ্যপ্রাচ্য বদলে গেছে। আমরা শত্রুতার দেয়াল ছিঁড়ে ফেলি। আমরা এই সমগ্র অঞ্চলে সমৃদ্ধি ও শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে এসেছি,” নেতানিয়াহু বলেন।

ওয়াশিংটনের মধ্যস্ততায় সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ হতে যাচ্ছে।

ফক্স নিউজের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ইসরায়েল ও সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের অনেক কাছাকাছি পৌঁছেছে।

জাতিসংঘে তার ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, "আমি বিশ্বাস করি আমরা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নেতৃত্বে সৌদি আরবের সাথে শান্তি অর্জন করতে পারব।"

তিনি আরও বলেন, "ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বের সাথে একসাথে কাজ করে, আমরা আমাদের সমস্ত জনগণের জন্য মহান আশীর্বাদের ভবিষ্যত গঠন করতে পারি।"

নেতানিয়াহু ইউএনজিএকে বলেছেন, ফিলিস্তিনি সংঘাত নির্বিশেষে ইসরায়েলকে অবশ্যই আরব রাষ্ট্রগুলির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হতে হবে। "আরব রাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্কের বিষয়ে ফিলিস্তিনিদের ভেটো দেওয়া উচিত নয়।"

নেতানিয়াহু বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনিদের অবশ্যই ইহুদি বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের অর্থ প্রদান বন্ধ করতে হবে। 

সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট