‘শাটডাউনের’ পথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক
‘শাটডাউনের’ পথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  © সংগৃৃহীত

মার্কিন কংগ্রেস বা আইনসভার নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানদের বিরোধীতার মুখে বাজেট পাস নিয়ে জটিলতায় পড়েছে বাইডেন সরকার। এর ফলে ১ অক্টোবর মধ্যরাত (স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১২টার পর) থেকে ‘শাটডাউন’ বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। 

সাধারণত প্রতিবছরের ১ অক্টোবর নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন দিয়ে থাকে মার্কিন ফেডারেল সরকারের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা। যা উচ্চকক্ষ হিসেবে সিনেট ও নিম্নকক্ষ হিসেবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস -এর সমন্বয়ে গঠিত। সরকারি ব্যয় হ্রাস করার দাবিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি এ অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি আটকে রেখেছে।   

রিপাবলিকান পার্টি জানিয়েছে, সরকারি ব্যয় কমানোর পরই নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন দেবে তারা। যার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন অর্থায়ন কমানোর দাবিটি অন্যতম। খবর বিবিসির। 

গত এক দশকে এ নিয়ে চতুর্থ শাটডাউনে যেতে পারে মার্কিন সরকার। এর ফলে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে জাতীয় উদ্যান, গবেষণা, বিনোদন, এমনকি বিয়ের লাইসেন্স, সবকিছুই উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হতে পারে। বেশিরভাগ সরকারি কর্মচারী বেতন ছাড়াই বরখাস্ত হতে পারেন এবং দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি কার্যক্রমও বন্ধ হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন সরকারের কার্যক্রম সচল রাখতে হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানদের সাথে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে বাইডেন সরকারকে।

এদিকে একবার এ শাটডাউন কার্যকর হলে তা কতদিন পর্যন্ত চলবে তা নিশ্চিত করে জানানতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। 

ডেমোক্র্যাটদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিনেট এবং রিপাবলিকানদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হাউজ, শাটডাউন এড়াতে এরইমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কংগ্রেস।  

কংগ্রেস যদি শনিবার রাতের মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে লাখ লাখ সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বেন।

শুধু তাই নয়, শাটডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিনা বেতনে কাজ করা ছাড়া তাদের সামনে আর অন্য কোনো রাস্তা খোলা থাকবে না। এমনকি ১৪ লাখ সামরিক বাহিনীর সক্রিয় সদস্য এবং কয়েক হাজার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলার এর আওতায় পড়তে পারেন।  

ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, হাউস রিপাবলিকানদের ব্যর্থতার কারণে মার্কিন পরিবারগুলো বিপদে পড়বে এবং আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, এর ফলে কৃষক, ছোট ব্যবসায়ী, খাদ্য কর্মসূচি, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং প্রধান অবকাঠামোগত উন্নতিসহ ‘মূল সরকারি কাজগুলো’ প্রভাবিত হবে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ নিতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে দেখা দিতে পারে বিশৃঙ্খলা। সবশেষ ২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকার সময় শাটডাউনের কবলে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। যা রেকর্ড ৩৪ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।


মন্তব্য