ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করায় আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে এফআইআর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১৪ PM , আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১৪ PM

ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ফিলস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ৪ ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।
গত রবিবার (৮ অক্টোবর) রাতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, এ সময়ে ছাত্ররা ‘উই স্ট্যান্ড উইথ ফিলিস্তিন’র পাশাপাশি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দেন। একইসঙ্গে তারা ‘এএমইউ স্ট্যান্ড উইথ ফিলিস্তিন, ফ্রি ফিলিস্তিন’ পোস্টার প্রদর্শন করেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিনের ওপর যেভাবে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। তারা বলেন, ইউক্রেনে হামলা হলে বিশ্ব ইউক্রেনের সমর্থনে এগিয়ে আসে, কিন্তু এখন যখন ফিলিস্তিনে সংকট দেখা দিয়েছে, তখন কোনো রাজনীতিবিদ বা অন্য সমাজের গুণকীর্তনকারীরা চুপ করে বসে আছেন। তাদের বক্তব্য- আজ ফিলিস্তিন সংকটে, কিন্তু আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের সমর্থনে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য দোয়া করছেন।
আরও পড়ুন:- এবার মিশরকে হুমকি দিয়ে যা বললো ইসরায়েল
এই বিষয়ে বিজেপি এমপি সতীশ গৌতম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, রেজিস্ট্রার এবং পুলিশের কাছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছিলেন। পুলিশ সুপার মৃগাঙ্ক পাঠক বলেন, সিভিল লাইন থানায় একটি তথ্যে জানা যায় যে ‘এএমইউ’ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে কিছু লোক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অনুমতি ছাড়াই একটি প্রতিবাদ মিছিল করেছে। যেটিতে কিছু আপত্তিকর এবং জ্বালাময়ী কথা বলা হয়েছে। এই বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে সিভিল লাইন থানায় প্রাসঙ্গিক ধারায় এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। আইনি মতামত নিয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে এএমইউ ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ ওয়াসিম আলী বলেন, আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সবসময়ই দেশের স্বার্থের পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কখনো এমন কোনো কাজ করেনি যা ভারতের অর্থাৎ দেশের স্বার্থবিরোধী হয়। ব্যক্তি যেই হোক না কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলে হামাসের হামলায় মর্মাহত তারকাদের ‘ভণ্ড’ বললেন বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর
এদিকে, এ প্রসঙ্গে উত্তর প্রদেশ সরকারের প্রতিমন্ত্রী ঠাকুর রঘুরাজ সিংয়ের অভিযোগ করে বলেছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্ত্রাসীরা বেরোয়। তাই এটি বন্ধ করে দিতে হবে। তিনি বলেন, 'আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্ত্রাসবাদীদের উত্থান। প্রত্যেক সন্ত্রাসী মুসলমান। ইসরাইলকে সমর্থন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল করছে ‘এএমইউ’-এর ছাত্ররা। তাই প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে দিল্লি পুলিশ ইসরাইলি দূতাবাসের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনের পক্ষে বিবৃতি দিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব
আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) এক কর্মকর্তা বলেন, দিল্লি পুলিশ ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইলি দূতাবাস এবং চাবাদ হাউসের চারপাশে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নয়াদিল্লিতে ইসরাইলি দূতাবাস এবং মধ্য দিল্লির চাঁদনি চকের চাবাদ হাউসের চারপাশে মোতায়েন স্থানীয় পুলিশকে কঠোর নজরদারি বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইসরাইলি দূতাবাস এবং ভারতে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূতের সরকারি বাসভবনের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া নয়াদিল্লির পাহাড়গঞ্জ এলাকায় ইহুদিদের ধর্মীয় স্থান চাবাদ হাউসের কাছেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।