যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা করলে কড়া জবাবের হুমকি ইরাক-ইরান-ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০২:২০ PM , আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩২ PM

যুক্তরাষ্ট্র যদি হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে তেল আবিবকে সহায়তা করে, তবে ওয়াশিংটনকে কড়া জবাব দেওয়া হবে। এমন হুমকি দিয়েছে ইরাক ও ইয়েমেনের একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। প্রয়োজনে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি ও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে হামলা চালানোর মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ইরাক ও ইয়েমেন থেকে এই হুমকি এমন এক সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং ভূমধ্যসাগরে বিমানবাহী রণতরিসহ অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ‘স্পষ্ট শয়তানি কাজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দ্রুত নিশ্চিত করতে কাজ করতে যাচ্ছে। এ সময় তিনি জানান, বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদসহ আয়রন ডোম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইসরায়েলকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিনকে সৌদির অকুন্ঠ সমর্থন
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার মিসাইল ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধ এরই মধ্যে পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইসরায়েল গাজার ২ শতাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে। এই অবস্থায় ইরাকের সশস্ত্র সংগঠন কাতাইব হিজবুল্লাহ বা হিজবুল্লাহ ব্রিগেড, বদর অর্গানাইজেশন ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুথি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে। প্রসঙ্গত, এই তিনটি সংগঠনেরই ইরানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে কথিত রয়েছে।
আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনে ২০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি সহায়তার নির্দেশ দিলো আরব আমিরাত
ইরাকের হিজবুল্লাহ ব্রিগেড হুমকি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা দিলে তাঁরা ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ব্যবহার করে স্পেশাল ফোর্সের মাধ্যমে হামলা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাদের স্থাপনায় হামলার অভিযোগ এনেছিল। উল্লেখ্য, বর্তমানে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই হাজার ও সিরিয়ায় ৯০০ সেনা রয়ে গেছে।
এদিকে বদর অর্গানাইজেশনের নেতা হাজি আল-আমিরি বলেছেন, ‘যদি তাঁরা (যুক্তরাষ্ট্র) ইসরায়েলকে সহায়তা করে, তবে আমরাও ইরাকে তাদের স্থাপনায় হামলাকে বৈধ বলে বিবেচনা করব।’ উল্লেখ্য, বদর অর্গানাইজেশন ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত আধাসামরিক বাহিনী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের অংশ। এই আধা সামরিক বাহিনীতে অনেকগুলো ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে বলে দাবি পশ্চিমা বিশ্বের।
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলের সমর্থনে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া
অন্যদিকে ইয়েমেনের বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপের কড়া জবাব দেওয়া হবে। প্রয়োজনে হামাসের হয়ে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক উপায় অবলম্বন করে হামলা চালানো হবে। এমনকি হুথি ওই নেতা লেবানন ও ইরাকের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বেঁধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করারও হুমকি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের ১২০০ ও ফিলিস্তিনের ৯৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।