ভারতীয় কংগ্রেস ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং বিজেপির ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে বিধ্বস্ত ভবনের সামনে এক ফিলিস্তিনি নারীর আহাজারি  © সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ভারতের রাজনীতিতেও। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি দলটি ইসরায়েলিদের ওপর হামাসের হামলারও নিন্দা করেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে সন্ত্রাসী আক্রমণ বলে আখ্যা দিয়েছে। পাশাপাশি ইসরায়েলি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর পৃথক দুই প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির এক রেজল্যুশনে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব ভূখণ্ডে স্বায়ত্তশাসনের মাধ্যমে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি কংগ্রেস তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।’ পাশাপাশি ওয়ার্কিং কমিটির রেজল্যুশনে বর্তমান সংকটের কারণসহ অন্যান্য সব সমস্যার সমাধানে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। তবে রেজল্যুশনে ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুন:- বোমা মেরে গাজার আল-কারাম অঞ্চল মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল

তবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ গত রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) শেয়ার করা এক টুইটে বলেন, ‘ইসরায়েলিদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ নিশ্চিত করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে।’ এ সময় তিনি আরও লেখেন, ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ইসরায়েলের জনগণের ওপর হামলার নিন্দা জানায়।’ 

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা ইসরায়েলের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। এক্সে (সাবেক টুইটার) বিজেপির অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা এক ভিডিওতে ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলাকে ভারতে চালানো বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়েছে, ‘আজ ইসরায়েল যেটার মুখোমুখি হয়েছে, ভারতও ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ধরনের হামলার শিকার হয়েছে। কখনোই ক্ষমা করা হবে না, কখনোই ভুলে যাওয়া যাবে না...।’ 

আরও পড়ুন:- গাজায় ইসরায়েলি পাশবাকি হামলায় ২৬০ শিশু নিহত

এর আগে হামলার পরদিন, অর্থাৎ গত রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র মোদি জানান, তিনি ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার খবরে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি বলেন, ‘এই হামলার নিরপরাধ ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রার্থনা ও সহমর্মিতা। এই কঠিন সময়ে আমরা ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াচ্ছি।’ 

পরে গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই আলাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করা এক টুইটে লেখেন, ‘এই কঠিন সময়ে ভারতের জনগণ ইসরায়েলের পাশে আছে। ভারত দৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীনভাবে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে।’

আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনে ২০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি সহায়তার নির্দেশ দিলো আরব আমিরাত

প্রসঙ্গত, ৫ দিন ধরে চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২৫৫ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের নিহতের সংখ্যা ১২০০, আর ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলায় ফিলিস্তিনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজায় সব ধরণের খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে মানবেতর জীবন পার করছে গাজায় অবরুদ্ধ কয়েক লাখ মানুষ।