গাজার হাসপাতালে হামলা ‘সংগঠিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘যুদ্ধাপরাধ’: ওআইসি

গাজা
গাজায় হামলায় আহত একদল শিশু  © সংগৃৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি। সংস্থাটি ওই হামলাকে ‘সংগঠিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিষয়ে আলোচনা করতে জেদ্দায় ওআইসির মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠকে ওআইসির মহাসচিব ইব্রাহিম তাহা সংস্থাটির এ অবস্থান ঘোষণা করেন। খবর পার্স টুডের।

তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের মানবিক মূল্যবোধের বিচারে হাসপাতালে হামলা মেনে নেয়া যায় না। তাহা বলেন, এটি একটি যুদ্ধাপরাধ ও সংগঠিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ যার বিচার করা জরুরি।

আরও পড়ুন:- গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে বললেন লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহ

এ ধরনের ভয়াবহ ইসরাইলি হামলা বন্ধ করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান ওআইসির মহাসচিব। তিনি বলেন, আগ্রাসন বন্ধ করে এখন গাজায় জরুরি খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ ২৩ লাখ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ইব্রাহিম তাহা বলেন, ওআইসি এর আগেও এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল যে, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ইসরাইলের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই এবং তাকে তার বর্বরতার জন্য কখনও বিচারের সম্মুখীন হতে হয়নি। তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়ন, তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান, হত্যা, সংগঠিত সন্ত্রাস, আল-আকসা মসজিদে হামলা এবং এ ধরনের অন্যান্য অপরাধ করার জন্য ইসরাইলকে কখনও শাস্তি পেতে হয়নি।

আরও পড়ুন:- গাজায় ‘মানবিক সহায়তা’ পাঠানোর প্রস্তাবের বিপক্ষে ভেটো দিলো যুক্তরাষ্ট্র

ওআইসির জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এরইমধ্যে জেদ্দায় পৌঁছেছেন। এ বৈঠক সম্পর্কে ওআইসির মহাসচিব আরো বলেন, “আমি আশা করি এই বৈঠকটি ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করতে, ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা করতে এবং এই অগ্নিপরীক্ষায় তাদের সহায়তা প্রদানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সফল হবে।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে গাজার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতাল হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। এ হামলায় একসঙ্গে ৫০০ জনের অধিক ফিলিস্তিনি শহীদ হয়। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় শুরু হয়। তবে নির্লজ্জ ইসরায়েল এই হামলার দায় অস্বীকার করে উল্টো হামাস ও ইসলামি জেহাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে। তাদের এই ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাদের সমর্থিত পশ্চিমা মিডিয়া।

গতকাল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বাইডেন বলেন, এই হামলা আপনি করেন নি, সম্ভবত অন্য কোন পক্ষ এই হামলা করেছে।

আরও পড়ুন:- ‘ইউরোপীয় নেতারা সমর্থন জানাতে ইসরাইল সফর করছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য নয়’

গাজা হাসপাতালে হামলা নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথমে একটা প্রতিবেদন লেখে। সেটার শিরোনাম ছিলো, গাজা হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত: বলছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এর কিছুক্ষণ পর শিরোনাম পাল্টে লেখে, গাজা হাসপাতালে হামলায় ৫০০ ফিরিস্তিনি নিহত: ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। পরের শিরোনাম থেকে ইসরায়েলকে সরিয়ে দেয়।

ইসরায়েরি ডিফেন্স ফোর্স বলছে, ইসলামি জিহাদ গ্রুপের রকেট মিসফায়ার হয়ে হাসপাতালে এসে পড়ে। যার ফলে এই ঘটনা ঘটে। তবে ইসরায়েলের এক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি কোন গ্রুপের কাছে এতো শক্তিশালী বোমা নেই যে হাসপাতাল তছনছ হয়ে যাবে। তারা যতো বোমা বানিয়েছে, তা এতো বিধ্বংসী নয়।