ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির খবরে লন্ডনের ‘স্কুল অব ইকনোমিকস’ ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৫২ PM , আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৫২ PM

হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পর এবার ইসরায়েল সফর করে দেশটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে সুনাক বলেন, 'বন্ধু হিসেবে ইসরায়েলের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে আপনার পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত।'
'আমরা সংহতি জানিয়ে আপনার পাশে থাকব, আপনার জনগণের পাশে থাকব এবং আমরাও চাই আপনি জয়ী হোন', বলেন তিনি।
এদিকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে বৃটেন। এমন খবরে লন্ডনের ‘স্কুল অব ইকনোমিকস অ্যান্ড পলিটিকাল সাইন্স’ ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভে ‘স্টপ আর্মিং ইসরায়েল’ ব্যানার হাতে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। এসময় ছাত্ররা ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে গাজায় অমানবিক হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে।
আরও পড়ুন:- গাজায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে মার্কিন পার্লামেন্ট ভবনে ইহুদিদের বিক্ষোভ
এদিকে ইসরায়েল সফরকালে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ায় ইসরায়েলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ফিলিস্তিনের বেসামরিক মানুষও হামাসের শিকার।'
'যুক্তরাজ্য এই অঞ্চলে সহায়তা বাড়াবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এখানকার মানুষের জন্য আরও সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করবে বলেও জানান তিনি।
একই সময়ে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসকে 'নব্য নাৎসি' হিসেবে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সুনাককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, 'ব্রিটিশরা ৮০ বছর আগে নাৎসিদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। হামাস হলো নব্য নাৎসি।'
আরও পড়ুন:- গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে বললেন লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহ
নেতানিয়াহু আরও বলেন, 'এটি কেবল ইসরায়েলের যুদ্ধ নয় বরং সভ্য ও মুক্ত বিশ্ব এবং আধুনিক আরব দেশগুলোর লড়াই।'
'অপর পক্ষ হলো শয়তানের অক্ষশক্তি, যার মধ্যে আছে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরান', যোগ করেন তিনি।
ইসরায়েল সফর শেষে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাত করতে ঋষি সুনাক আজই সৌদি আরব যাবেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।
এদিকে গাজার হাসপাতালে বর্বর হামলার বিষয়ে রাটগার্স ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মধ্যপ্রাচ্যের অধ্যয়নের অধ্যাপক আবদেল হামিদ সিয়াম কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছেন, “এর আগে কখনও এমন হয়নি। আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করেই কাজ করছে ইসরাইল। তারা সবার সামনে যুদ্ধাপরাধ করছে এবং এই নেতারা যুদ্ধবিরতির ডাকও দেয়নি। এটা নজিরবিহীন।”
আরও পড়ুন:- অপরাধ করে অন্যের ওপর দায় চাপানো ইসরায়েলের পুরনো অভ্যাস: জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক স্থাপনা, হাসপাতাল, স্কুল বোমা মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া বেসামরিক নাগরিক, নারী-শিশুদের অবাধে হত্যা করছে। পুরো গাজা অঞ্চল অবরোধ করে মানবিক সহায়তা পর্যন্ত নিয়ে যেতে দিচ্ছে না, যা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ। কিন্তু এর পরেও ইউরোপীয় নেতারা অবাধে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪৮৫ জন শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১২ হাজার ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে প্রায় ১৪০০ জন।