রাফাহ ক্রসিং খুলে দিয়েছে মিশর, গাজায় ঢুকতে শুরু করেছে ত্রাণবাহী ট্রাক

গাজা
মিশর সীমান্তে অপেক্ষায় থাকা ত্রাণবাহী ট্রাক  © দ্য গার্ডিয়ান

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ অঞ্চল গাজা ও মিসরের সীমান্তে যোগাযোগের একমাত্র পথ রাফাহ ক্রসিং খুলে দিয়েছে মিসর। তাতে মিসর থেকে ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করলেও কোনো ফিলিস্তিনি যেতে পারছেন না মিসরে। আজ শনিবার সকালে রাফাহ ক্রসিংয়ের মিসরীয় নিরাপত্তারক্ষী ও মিসরীয় রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিসরীয় রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তারা ত্রাণবাহী ট্রাকের গাজায় প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মিসরের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিও থেকে দেখা গেছে বেশ কয়েক ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করছে। 

তবে গাজার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাসের জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছে, ‘ত্রাণ বহনকারী যে গাড়িবহরটির আজ গাজায় প্রবেশের কথা ছিল, তাতে মোট ২০টি ট্রাক রয়েছে। এসব ট্রাকে ওষুধ, বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সামান্য পরিমাণ খাদ্যসহায়তা এসেছে।’ 

আরও পড়ুন:- ইসরায়েলকে সমর্থন করায় মার্কিন সেনাদের ইরাক ছাড়ার আলটিমেটাম

তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এমন মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে এই প্রাথমিক সহায়তা 'সমুদ্রের মধ্যে একটি বিন্দুর সমান'। 

২০টি ট্রাককে মিশর গেইট ও ফিলিস্তিনি গেইটের মধ্যবর্তী স্থানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন ট্রাকগুলোকে গাজায় জাতিসংঘের গুদামে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে বিতরণ করা হবে গাজা উপত্যকাজুড়ে। 

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক কিন্ডি ম্যাককেইন ২০ ট্রাক ত্রাণকে স্বাগত জানান তবে এতটুকু যথেষ্ট নয় বলে সতর্ক করেন তিনি। 

আরও পড়ুন:- প্রেসিডেন্ট হলে হামাসের প্রতি সহমর্মীদের স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করব: প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডিস্যান্টিস

ম্যাককেইন বলেন, গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ। খাবার, পানি, বিদ্যুৎ কিচ্ছু নেই। যা পরবর্তীতে আরো বিপর্যয়ের, অনাহারের এবং আরো বহু রোগের কারণ হতে পারে। আমাদের আরো ট্রাক প্রয়োজন। নিরাপদ এবং টেকসই উপায়ে সঠিক সুবিধাভোগীদের জন্য সাহায্য পৌঁছানো নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা নিয়ে হতাশা দেখা গেছে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে ১০০ ট্রাক ত্রাণ আসার কথা থাকলেও ২০টি ট্রাক আসায় তারা মর্মাহত। 

এক ফিলিস্তিনি বলেন, আমরা খাদ্য ও প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জাম আনাকে স্বাগত জানাই। তবে জ্বালানি সরবরাহ না আসা বেশি উদ্বেগের। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে পাঁচটি হাসপাতালে সেবা দেওয়া বন্ধ আছে। জ্বালানি স্বল্পতার কারণে আরো দুটি শিঘ্রই বন্ধ হয়ে যাবে। 

আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনিদের বায়োতে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ, ক্ষমা চাইলো মেটা

প্রথম দফা ত্রাণ পাঠানোর পর জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, এটাই যাতে শেষ না হয়।

তিনি বলেন, গাজার মানুষদের কাছে নিয়মিত প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ শুরুর বিষয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। 

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, নির্দোষ মানুষের কষ্ট লাঘবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক ধাপ। 

এদিকে ইসরায়েল-হামাদ যুদ্ধ থামানোর চেষ্টায় মিশরের কায়রোতে শনিবার (২১ অক্টোবর) শান্তি সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে যোগ দিতে শুরু করেছেন বিশ্বের শীর্ষ অনেক নেতা।