গাজায় জিম্মি মা-মেয়েকে মুক্তি দিয়ে যে বার্তা দিলো হামাস
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২৯ PM , আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২৯ PM

জিম্মি করে রাখা দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা এক বিবৃতিতে বলেন, "কাতারের প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায়, আল-কাসাম ব্রিগেডস মানবিক কারণ বিবেচনায় নিয়ে দুই আমেরিকান নাগরিককে (মা-মেয়ে) মুক্তি দিয়েছে।"
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ৫৯ বছর বয়সী জুডিথ তাই রানান এবং তার ১৭ বছর বয়সী মেয়ে নাটালিকে গাজা উপত্যকা সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে হামাস। আরব-ইসরায়েলে চলমান সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথম বন্দীমুক্তি হিসেবে মার্কিন এই মা-মেয়ের মুক্তি উভয়পক্ষই নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন:- রাফাহ ক্রসিং খুলে দিয়েছে মিশর, গাজায় ঢুকতে শুরু করেছে ত্রাণবাহী ট্রাক
আবু ওবাইদা বলেন, "এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো, মার্কিন জনগণ এবং পুরো বিশ্বের কাছে প্রমাণ করা যে, বাইডেন ও তার ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের দাবিগুলো মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।"
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য গাজী হামাদ বলেন, দুই মার্কিন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হামাসের পক্ষ থেকে একটি 'শুভেচ্ছার' ইঙ্গিত।
দুই জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে হামাস কিছু পেয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হামাদ জানান, "এটি হামাসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার একটি ইঙ্গিত; এর মাধ্যমে পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়।"
"বন্দীদের বিষয়টি হামাস ইতিবাচকভাবে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত; তবে প্রথমে গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনিদের বায়োতে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ, ক্ষমা চাইলো মেটা
এর আগে হামাস জিম্মি 'বিদেশি' নাগরিকদের 'অতিথি' হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছিল, উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু শুধু বিদেশিদের নাকি ইসরায়েলিদেরও মুক্তি দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে হামাস নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি।
সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার ঘটনাটি 'প্রথম পদক্ষেপ'। আরও অনেকের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে।
হামাস দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জিম্মি বাকিদের উদ্ধারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে 'জয়ের আগ পর্যন্ত' ইসরায়েলি বাহিনী তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগের প্রশংসা করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য জিম্মিদের মুক্তির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
আরও পড়ুন:- আমার মেয়ে গাজায় জন্ম নিলে কীভাবে রক্ষা করতাম: স্বরা ভাস্কর
দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করেন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা। এর কিছুক্ষণ পরেই নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় ৪ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ।
নিহতদের মধ্যে শিশু ১ হাজার ৫২৪, আর নারী ১ হাজারের বেশি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২২ সাংবাদিকও। এ ছাড়া, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় বৃহস্পতিবার পাঁচ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত চার হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ জন সেনা ও পুলিশ সদস্য।