গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে ৫,০৮৭; এদের মধ্যে শিশু ১,৮৭৩ জন

গাজা
গাজার এক হাসপাতালে আহত শিশু  © সংগৃৃহীত

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ক্রমাগত বিমান হামলা করে যাচ্ছে। এতে আহত ও নিহত হচ্ছে হাজার হাজার বেসামরিক গাজাবাসী। ঠিক তেমনি বোমাবর্ষণের দশম দিনে উপত্যকাটির খান ইউনুস শহরে নাসের মেডিকেল সেন্টারে আহত, রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি হয় অনেকে। 

সেদিনই ইসরায়েলের বিমান হামলায় সেখানকার স্থানীয় একটি পরিবারের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়; যারা কিনা গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আসা বাস্তুচ্যুত একটি পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। ওই হামলায় কয়েক ডজন মানুষ আহত ও নিহত হয়, যার মধ্যে ছিল একটি শিশুও।  

হাসপাতালের ইমারজেন্সি রুমে চিকিৎসকেরা আহত অবস্থায় আসা মানুষগুলোকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। তার পাশেই ছিল ওই ছেলে শিশুটির দেহ। বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপের পুরু আস্তরণে ঢাকা পড়েছিল সে।

আরও পড়ুন:- হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলা না চালাতে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

মোহাম্মদ জাকাউত নামের একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিশুটির অবস্থা পরীক্ষা করে এবং দেখতে পায় যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। এই ঘটনা সম্পর্কে ঐ ইমারজেন্সি রুমে দায়িত্বরত গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আয়মান আল-ফাররা টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আল-জাজিরাকে বলেন, "সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। শিশুটির দেহে কোনো আঘাত ছিল না!"

তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এই শিশুটির বাবা-মা কে, সেটি জানা যায়নি। এমনকি শিশুটির নামও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া নাম-পরিচয়হীন হিসেবে ভর্তি থাকা এই শিশুটিই প্রথম নয়। বরং ইসরায়েলের বিমান হামলার পর থেকে এমন বহু শিশুই এখানে ভর্তি রয়েছে।

আরও পড়ুন:- হিজবুল্লাহর হামলার মুখে লেবানন সীমান্তের আরো ১৪ গ্রাম খালি করছে ইসরাইল

হাসপাতালের ইমারজেন্সি কক্ষের দায়িত্বে থাকা ২৪ বছর বয়সী ইন্টার্ন চিকিৎসক ওমর আল-নাজ্জার এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে জানান, প্রতিটি বিমান হামলা যখন একেকটি বাড়িতে আঘাত করে, তখন প্রায়শই একটি পরিবারের সবাই আহত কিংবা নিহত হয়। তখন তাদের পরিচয় সনাক্তের জন্য কাউকে পাওয়া যায় না।

নাজ্জার বলেন, "তাই আমরা তাদের পাশে অজ্ঞাত ১, অজ্ঞাত ২, অজ্ঞাত ৩ এমন নাম লিখে থাকি। তবে নাম-পরিচয়হীন কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ শিশু খুঁজে পাওয়ার ঘটনা একটু ব্যতিক্রমই ছিল। যদিও এগুলো খেয়াল করার মতো সময় আমাদের হাতে নেই। দিন কখন শুরু হচ্ছে, কখন শেষ হচ্ছে, আমাদের জানা নেই। কেননা আমরা সার্বক্ষণিক ইমারজেন্সি কক্ষে কাজ করছি।"

গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৭ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ১,৮৭৩ জন শিশু, ১,১০১ জন নারী ও ১,৬৭৭ জন পুরুষ। আর সবমিলিয়ে আহত হয়েছে প্রায় ১৪,২৪৫ জন।