যুধ্ববিধ্বস্ত গাজার ছবি সরবারাহেও বাধা স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠানগুলোর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৩৫ PM , আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৪৮ PM

স্যাটেলাইট ছবি সরবারাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সংবাদমাধ্যমগুলোকে যুদ্ধাঞ্চল গাজার ছবি যথাযথভাবে সরবারাহ করছে না। বিশেষ করে চলমান যুদ্ধে উপতক্যটিতে ইসরায়েলি বাহিনী অগ্রসর হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আল জাজিরার রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যদিও ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর একই ধরনের ছবি সরবারাহে প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো বিলম্ব করছে না।
যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থা বুঝতে স্যাটেলাইট ছবিগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে গত ২২ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় স্থল অভিযানের জন্য যে অগ্রসর হচ্ছে সেটা সম্পর্কে যথাযথ ধারণা লাভ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন:- হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সমর্থন করায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালো ইসরায়েল
কিন্তু স্যাটেলাইট ছবি সরবারাহকারী প্রতিষ্ঠান প্ল্যানেট ল্যাব সম্প্রতি সাবস্ক্রাইব করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গাজার হাই-রেজুলেশনের ছবি সরবারাহ করছে না। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সেমাফোর এক রিপোর্টের মাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
সাবস্ক্রাইব করা সংবাদমাধ্যমগুলো সেমাফোরকে জানান, অক্টোবর ৩০ থেকে নভেম্বর ১ পর্যন্ত নিম্ন কিংবা মাঝারি রেজুলেশনের কোনো ছবিও প্ল্যানেট ল্যাবের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হয়নি।
প্ল্যানেট ল্যাব মূলত নাসায় কর্মরত সাবেক বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্যাটেলাইট ছবি সরবারাহ না করার বিষয়ে কোনো ব্যাখা প্রদান করা হয়নি।
আরও পড়ুন:- অবরুদ্ধ গাজায় বিমান থেকে চিকিৎসা সামগ্রি ফেললো জর্ডান
অন্যদিকে সেমাফোরের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকাশিত গাজার স্যাটেলাইট ছবি মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসাথে গত ১৯ অক্টোবর নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্কের অবস্থান দেখা যায়।
আবার প্ল্যানেট ল্যাবের প্রতিদ্বন্দ্বী মেক্সার টেকনোলজিও যথাযথভাবে গাজার স্যাটেলাইট ছবি সরবারাহ করছে না। বরং যেসব ছবি প্রকাশ করছে সেগুলোও তাৎক্ষণিক নয়; বরং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর৷
এদিকে তৃতীয়বারের মতো গাজায় সব ধরনের যোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
গতকাল (রোববার) ফিলিস্তিনি টেলিযোগাযোগ কোম্পানি প্যালটেল বলেছে, "এর আগে পুনরায় সংযোগ দেওয়া মূল রুটটি আবারও ইসরায়েলের দিক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।"
এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ নিয়ে তিনবারের মতো গাজায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো। আগেরবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী করেছে কি না — এ নিয়ে তারা কিছু বলতে রাজি হয়নি।
আরও পড়ুন:- অবরুদ্ধ গাজায় বিমান থেকে চিকিৎসা সামগ্রি ফেললো জর্ডান
কিন্তু তখন আইডিএফ বলেছিল, নিজেদের বাহিনীকে রক্ষা করতে তারা 'যা করা দরকার তা করবে'। এমতাবস্থায় এবারের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি সামরিক আক্রমণের নতুন পর্যায় সম্পর্কে জানার কাজটি আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে জাতিসংঘের প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি এজেন্সির মুখপাত্র জুলিয়েট তোমা বলেন, "আমরা ইউএনআরডব্লিওএ টিমের অধিকাংশ সদস্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না।"
প্রথমবার গাজায় যোগাযোগ বিভ্রাট হয়েছিল ৩৬ ঘণ্টার জন্য। পরবর্তীতে দ্বিতীয়টি কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এমতাবস্থায় স্থল আক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে তৃতীয়বারের মতো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কতদিন স্থায়ী হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর থেকেই বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইসরায়েলের পক্ষ নিতে দেখা যাচ্ছে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে ফিলিস্তিনিদের আরবি নামের অনুবাদে সন্ত্রাসী উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটি সয়ংক্রিয় অনুবাদে বাগের কারণে এটা হয়েছে বলে উল্লেখ করে।
এরপর মেটা লক্ষাধিক ফিলিস্তিনপন্থী একাউন্ট লক করে দেয়। যদিও ওইসময় মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন এক বিবৃতিতে বলেছিল, "এই অ্যাকাউন্টগুলি প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তার কারণে লক করা হয়েছিল। আমরা অ্যাকাউন্ট মালিকদের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য কাজ করছি।" "তারা শেয়ার করছে এমন কোনো বিষয়বস্তুর কারণে আমরা এই অ্যাকাউন্টগুলিকে নিষ্ক্রিয় করিনি।"