হামাসের সেঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধসের শঙ্কায় ইসরায়েল

ইসরায়েল-হামাস
গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত জনশূন্য নগরী  © ব্লুমবার্গ

হামাসের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধসের শঙ্কায় রয়েছে ইসরায়েল। গতকাল রবিবার (৫ নভেম্বর) দেশটির ক্যালকালিস্ট ফাইন্যানসিয়াল পত্রিকার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজায় তাদের সম্ভাব্য যুদ্ধ খরচ হবে ২০০ বিলিয়ন শেকেল (৫১ বিলিয়ন ডলার; ১ ডলার সমান ৩.৯১১৯ শেকেল)। দীর্ঘমেয়াদে এবং আঞ্চলিকভাবে যুদ্ধ চালালে এই ব্যয় বাড়বে কয়েকগুণ। যা অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয় আনবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা কেঁপে উঠছে ইসরায়েলি গোলা, রকেট আর মিসাইলের আঘাতে। ট্যাংক, কামান আর ভারী সমরাস্ত্র নিয়ে স্থল অভিযান পরিচালনা করছে সেনারা। ব্যাপক এই অভিযানের পেছনে তেল আবিবের খরচাও আকাশচুম্বী।

আগ্রাসনের সাথে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে যুদ্ধ ব্যয়ও। ইসরায়েলি একটি পত্রিকা বলছে, গাজায় হামাসকে নির্মূলে এ সর্বাত্মক অভিযানে তেল আবিবের ব্যয় হবে ৫১ বিলিয়ন ডলার। যা ইসরায়েলের মোট দেশজ উৎপাদনের ১০ শতাংশ। সংঘাতের স্থায়ীত্ব ৮ থেকে ১২ মাস ধরে সম্ভাব্য এই ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:- ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বিরোধীদের তোপের মুখে অস্ট্রেলিয়ান সরকার

তবে গাজার মধ্যে সংঘাত সীমাবদ্ধ না থেকে আঞ্চলিক পরিসরে ছড়িয়ে পড়লে, এই খরচ বাড়বে কয়েকগুণ। সেক্ষেত্রে হামাসের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ, ইরান বা ইয়েমেনকেও মোকাবেলা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের ঢালাও সহায়তা মিললেও বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে অর্থনীতিতে। যা ইসরায়েলের বাজেটেও বড় ধরণের ঘাটতি ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সামরিক ব্যয় ছাড়াও ইসরায়েলের অর্থনৈতিক ধসের জন্য আরও কিছু দিক বিবেচনা করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি মুদ্রায় রাজস্বের ক্ষতি হবে ৪০-৬০ বিলিয়ন শেকেল। এছাড়া ব্যবসায়ীদের ১৭-২০ বিলিয়ন শেকেল ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি নাগরিকদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে আরও খরচ করতে হবে ১০-২০ বিলিয়ন অর্থ।

আরও পড়ুন:- অবরুদ্ধ গাজায় বিমান থেকে চিকিৎসা সামগ্রি ফেললো জর্ডান

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা বিতর্কিত পদক্ষেপের কারণে জনগণের ব্যাপক রোষানলে পড়ে নেতানিয়াহু প্রশাসন। প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল ব্যয়ের পরও হামাসের হামলা ঠেকাতে না পারায় তীব্র হচ্ছে অসন্তোষ। যুদ্ধের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকট নেতানিয়াহু প্রশাসন কীভাবে মোকাবেলা করবে সেটাই এখন দেখার।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে ওইদিনই যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে। তবে তাদের এই হমলা স্বাভাবিক কোন হামলা নয়। এই হামলায় স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স এমনকি শরণার্থী শিবির কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না। 

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২০০ জনের উপরে শিশু। নারী আছে ২ হাজার ৯০০ জনের মতো। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ।


মন্তব্য