লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলা চালাল হামাস

ইসরায়েল-হামাসস
  © সংগৃহীত

টানা এক মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। নির্বিচারে বোমা হামলার পাশাপাশি গত ২৮ অক্টোবর থেকে সেখানে স্থরঅভিযানও শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই মাসে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। পাল্টা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও।

এর মধ্যেই চলমান এই সংঘাত পেয়েছে নতুন মাত্রা। গাজার পাশাপাশি এবার লেবানন থেকেও ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে হামাস।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার জবাবে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলে সিরিজ রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে। সোমবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে হামাসের কাসাম ব্রিগেডের লেবানন শাখা বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলি শহর নাহারিয়া এবং হাইফা শহরের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ১৬টি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

অন্যদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা এক ঘণ্টার মধ্যে লেবানন থেকে প্রায় ৩০টি রকেট নিক্ষেপের ঘটনা শনাক্ত করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, “যেস্থান থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে সেদিকে কামানের গোলাবর্ষণ করছে আইডিএফ।”

কাসাম ব্রিগেডস বলেছে, গাজায় আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবে এসব রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।

যদিও এক মাস আগে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গাজাকে লক্ষ্য করে এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলা চলছে, তারপরও লেবাননের সাথে ইসরায়েলের সীমান্তেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেখানে শক্তিশালী ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রায় এক মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করে চলেছে।

বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের আন্তঃসীমান্ত গুলি বিনিময়ের ঘটনায় লেবাননে অন্তত ৮১ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৫৯ জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। অন্যদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি ছয় সৈন্যসহ দুই বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলার বিষয়ে অবশ্য কাসাম ব্রিগেড তার বিবৃতিতে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানায়নি। তবে সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবানন থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে হাইফার দিকে এসব রকেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটল। 

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অমানবিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের এই হমলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না হাসপাতাল, স্কুল, অ্যাম্বুলেন্স এমনকি শরণার্থী শিবিরও। এরই মধ্যে কয়েকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে পাঁচ শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় গত ৩২ দিনে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ হাজারের উপরে শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ২৫ হাজারের উপরে।

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। আর তাদের এই অপকর্মে নিঃশর্ত সহযোগিতা করছে সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ইরাকে এক ঝটিকা সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেখানে তিনি বলেন, ইসরায়েলের গায়ে টোকা পড়লে ইরানকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

সূত্র: আল জাজিরা