গাজায় ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করায় রাশিদার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ

ইসরায়েল
মার্কিন কংগ্রেসের একমাত্র ফিলিস্তিনি-আমেরিকান আইনপ্রণেতা রাশিদা তালিব (ছবি: ৭ নভেম্বর)  © স্ক্রিন গ্র্যাব

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ কংগ্রেসে একমাত্র ফিলিস্তিনি-আমেরিকান আইনপ্রণেতা রাশিদা তালিবের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে। গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলা ও তাতে মার্কিন সরকারের সমর্থনের সমালোচনা করায় এই নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। তবে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এই নারী আইনপ্রণেতা বলেছেন, তাকে চুপ করানো যাবে না। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিরোধী শিবির রিপাবলিকানদের আনা প্রস্তাবটি ২৩৪-১৮৮ ভোটে গৃহীত হয়েছে। এমনকি ক্ষমতাসীন রাশিদা তালিবের ডেমোক্র্যাট দলীয় কিছু সদস্যও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি আক্রমণের বিষয়ে রাশিদা তালিবের সমালোচনাকে ইসরাইল রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার আহ্বান বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

আরও পড়ুন:- ১২ বন্দী মুক্তির বিনিময়ে মানবিক গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে!

প্রসঙ্গত, গাজা ইস্যুতে সমালোচনা করায় রাশিদার বিরুদ্ধে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে শাস্তি দেওয়ার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এর আগেও তার বিরুদ্ধে এমন প্রস্তাব আনা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, তবে মঙ্গলবার কথা বলার সময় ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন এই আইনপ্রণেতা বলেছেন, তাকে চুপ করানো যাবে না।

‘কোনো সরকারই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। ইসরাইল সরকারের সমালোচনা করা ইহুদি-বিরোধী ধারণাটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক নজির স্থাপন করে এবং এটিকে আমাদের জাতির মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কণ্ঠস্বরকে থামিয়ে দিতে ব্যবহৃত হয়েছে,’ বলেন  রাশিদা তালিব।

আরও পড়ুন:- গাজায় ইসরায়েলের স্পেশাল ফোর্সের সদস্য নিহত

যদিও কংগ্রেসে কর্মরত বেশিরভাগ মার্কিন রাজনীতিবিদরা ইসরায়েলকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন, তবে ভিন্নমতের সংখ্যাও বাড়ছে।

গতকাল বুধবার ১০০ জনেরও বেশি মার্কিন কংগ্রেসের কর্মী যুদ্ধবিরতির দাবিতে ওয়াকআউট করেছিলেন।

কংগ্রেস প্রতিনিধি পরিষদে নির্বাচিত একমাত্র ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মহিলা রাশিদা তালেবকে নিন্দা করার জন্য ভোট দেওয়ার পরে তারা এই পদক্ষেপ নেয়।

একটি আবেগঘন বক্তৃতায় রাশিদা তালেব গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। তিনি তার সহকর্মীদের বলেন, "আমি বুঝতে পারছি না কেন ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদ আপনাদের সবার কাছে আলাদা শোনাচ্ছে।"

আরও পড়ুন:- গাজায় সহিংসতার: ইসরায়েল ও মার্কিন ব্র্যান্ডের পণ্য বর্জন করছে পাকিস্তান

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের প্রথম দিন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের বেসামরিক নাগরিকের ওপর হমলা চালাতে শুরু করে। এরই প্রতিক্রিয়ায় এবং দীর্ঘ অবরোধের মুখে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ হামলায় প্রায় ১৪০০ জন নিহত হয়। এছাড়া  ২০০ জনেরও বেশি বন্দী করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

এদিনই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা শুরু করেছে ইসরায়েলে। এছাড়া বেসামরিক অবকাঠামোয় হামলা করে গাজা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। দখলদার ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৫৬৯ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শুধু শিশু রয়েছে ৪ হাজার ৩০০ জনের উপরে। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। এছাড়া বাস্তুচ্যূত হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ