গাজায় স্থল অভিযানে ইসরায়েলের ১৩৬ সামরিক যান ধ্বংস, নিহত ৩৩ সেনা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৪ AM , আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৪ AM

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানে গিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এদিকে ১২ থেকে ১৫ জন বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে গাজায় এক বা দুদিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিতে ইসরাইল রাজি হতে পারে বলে জানিয়েছে কাতার।
বুধবার হামাস বলেছে, গাজায় ইসরাইলের স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে তারা ১৩৬ সামরিক যান ধ্বংসের তথ্য নথিভুক্ত করেছে।
হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-আকসা টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত একটি বক্তৃতায় মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেছেন, আমরা ইসরাইলি স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ১৩৬ ইসরাইলি সামরিক যান ধ্বংস করেছি। বিদেশি বন্দিদের মুক্তিতে করতে তারা বিমান হামলা জোরদার করে এবং গণহত্যা করছে।
সম্ভাব্য বন্দিবিনিময় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের একমাত্র পদ্ধতি হলো বন্দিদের বিনিময়ের জন্য একটি ব্যাপক চুক্তি, তা সম্পূর্ণভাবে হোক বা আংশিকভাবে হোক বা দলগতভাবে হোক। ইসরাইলের কারাগারে থাকা আমার বন্দি।
আরও পড়ুন:- গাজায় ইসরায়েলের স্পেশাল ফোর্সের সদস্য নিহত
বুধবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানের সময় ৩৩ সেনা নিহত হয়েছে। একটি সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার যুদ্ধে আর্টিলারি কর্পসের একজন সেনা নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই সেনা।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উত্তর গাজা উপত্যকায় সংঘাতের সময় বিমানবাহিনীর অভিজাত শালদাগ ইউনিটের আরেক সৈনিকও নিহত হয়েছে। ইসরাইল বলেছে যে ২৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানের সময় তাদের ২৬০ সেনা আহত হয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান চালাতে যাওয়া সেনারা বেশ ভালোই এগিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরাইলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস। তবে তিনি সঙ্গে এও স্বীকার করেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য হামাসও বেশ ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।
আরও পড়ুন:- আমেরিকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল মিশরের প্রেসিডেন্ট
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি যুদ্ধক্ষেত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হামাস এই যুদ্ধের জন্য খুবই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।’
এরই মধ্যে তারা গাজাকে দুই ভাগ করে ফেলেছে। এছাড়া গাজার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে তাদের সেনা। গাজায় যে কোনো সময় বড় ধরণের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী।
৭ অক্টোবর তার অপারেশন আল-আকসা বন্যা চলাকালীন হামাস ইসরাইলি কারাগারে বন্দি প্রায় ৬ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে প্রায় ২৪২ ইসরাইলিকে বন্দি করেছে।
প্রতিবাদে ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:- গাজায় ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করায় রাশিদার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ
এদিকে নিজেদের হাতে আটক জিম্মিদের মধ্য থেকে ১০-১৫ জনকে মুক্তি দিতে পারে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর এই ১০-১৫ জনকে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে গাজায় এক অথবা দুদিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারে ইসরাইল।
বুধবার (৮ নভেম্বর) কাতারের একটি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। নাম গোপন রাখার শর্তে সূত্রটি বলেছে, ১০-১৫ জিম্মিকে ছাড়িয়ে নিতে কাতারের মধ্যস্থতায় ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় আলোচনা চলছে। তাদের মুক্তি দেওয়ার বদলে দুই বা একদিনের যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৫৬৯ জন। বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৪ হাজার ৩২৪ জনই শিশু। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে দুই হাজার ৮২৩ নারী ও ৬৪৯ জন বৃদ্ধ আছে।
সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি