ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৩ PM , আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৩ PM

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) হোয়াইট হাউজের বাইরে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, “না, কোনো সম্ভাবনা নেই।”
পরে বৃহস্পতিবারই মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি বিমানে ওঠার প্রাক্কালে বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি তিন দিনেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধে সাময়িক বিরতি দেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু ইসরাইলের বিরোধিতার কারণে সে প্রচেষ্টায় তিনি সফল হননি।
ইহুদিবাদী ইসরাইল তার ভাষায় গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করার আগ পর্যন্ত ওই অবরুদ্ধে ভূখণ্ডের ওপর ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে ইচ্ছুক নয়। তা সত্ত্বেও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বৃহস্পতবিার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, ইসরাইল মানবিক ত্রাণ তৎপরতা চালাতে প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। বিষয়টিকে কিরবি ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:- খবর প্রকাশে ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব, নিউইয়র্ক টাইমস কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ
এর আগে গত রবিবার ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। তবে গোপন খবর হচ্ছে, হামাস তাদের হাতে বন্দি ইসরাইলিদের মুক্তি দিলেও তেল আবিব যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, কিছু সংখ্যক বন্দির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এরইমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন নেতানিয়াহু।
গার্ডিয়ান লিখেছে, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় হামাসের হাতে আটক নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ছেড়ে দিতে চেয়েছিল হামাস। কিন্তু তেল আবিব প্রস্তাবটি প্রত্যখ্যান করেছে। এর পরিবর্তে নেতানিয়াহু স্থল অভিযান চালিয়ে হামাসকে ধ্বংস করতে বেশি প্রতিজ্ঞাবন্ধ তাতে হামাসের হাতে আটক বন্দিদের ভাগ্যে কী ঘটল তা নিয়ে যুদ্ধবাজ এই প্রধানমন্ত্রীর মাথাব্যথা নেই।
আরও পড়ুন:- মুসলিমরা এখন না হলে আর কখন আওয়াজ তুলবে, প্রশ্ন এরদোগানের
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা করে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি। এদের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার জনই শিশু। এছাড়া নারী রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। আহত হয়েছে আরও ২৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি।
এদিকে গাজার হাসপাতালগুলোতেও হামলা শুরু করেছে দখলদার বাহিনী। গত তিন দিনে গাজার ৮টি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এছাড়া শরণার্থী শিবির, অ্যাম্বুলেন্স, মসজিদ, গির্জা, বেসামরিক স্থাপনাসহ গাজার প্রায় অর্ধেক স্থাপনা ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। এর পরেও পশ্চিমা বিশ্ব ও মিডিয়া নির্লজ্জভাবে ইসরায়েলকে সাপোর্ট করে যাচ্ছে।
ইউএনও, হিউম্যান রাইট ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিশ্বের বড় বড় সংস্থা স্বীকার করেছে গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে, এমনকি গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল বাহিনী। এর পরেও গণতন্ত্রের বুলি আওড়ানা পশ্চিমা সকল দেশই পক্ষ নিয়েছে দখলদার বাহিনীর।