উত্তর গাজার স্কুলে বোমা হামলা, নিহত ৫০ ফিলিস্তিনি
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫১ PM , আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫১ PM

গাজা থেকে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধি ইমাদ জাকৌত প্রাথমিকভাবে উত্তর গাজার বৃহত্তম শরণার্থী শিবির জাবালিয়ার আল-ফাখুরা স্কুলে ইসরায়েলের বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান। পরবর্তীতে তিনি গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানান, স্কুলে ইসরায়েলের বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি বোমা হামলার পর সেখানকার বিভীষিকাময় ছবি সামনে আসছে। এতে দেখা গেছে, আল-ফাখুরা স্কুলের অনেক কক্ষ ও করিডোরে ফিলিস্তিনিদের মরদেহ পড়ে আছে। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিনিধি বলেন, ‘‘শত শত মানুষ এই স্কুলের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।’’
‘‘স্বাভাবিক সময়ে জাবালিয়া শরণার্থী শিবির অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ থাকে। এই শরণার্থী শিবিরের ভেতরের কিছু বাসিন্দা ইসরায়েলি বাহিনীর নির্দেশে গাজা উপত্যকার দক্ষিণে পালিয়েছেন। আর অন্যরা কোনো নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাননি। যে কারণে তারা ঘরবাড়ি, খামার, আবাদি জমি ছেড়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এই শরণার্থীরা জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্কুলগুলোও আর নিরাপদ নয়।’’
গাজার ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, শনিবার ভোরের দিকে ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত স্কুলটিতে হামলা হয়েছে। স্কুলটিতে শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলকে বিদ্যুৎ না দেওয়ার ঘোষণা জর্ডানের
আল জাজিরার আরেক প্রতিনিধি তারেক আবু আজজুম বলেন, ‘‘সর্বত্র মৃতদেহ পড়ে আছে এবং মেডিকেল টিমের সদস্যরা আহতদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’’ তিনি বলেন, উত্তর গাজায় ইসরায়েলের স্থল হামলার মাঝে অনেক ফিলিস্তিনি নিরাপত্তার জন্য ইন্দোনেশিয়ার ফিল্ড হাসপাতালের পাশের ওই স্কুলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের আল-ফাখুরা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের মাঝে অনেকেই আগের ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন। তারা সহিংসতা থেকে বাঁচতে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন এই শরণার্থীদের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বার্তা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’’
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। সেখানে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বসবাস রয়েছে বলে দাবি করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও ওই অঞ্চলের দেশগুলোর নিন্দা সত্ত্বেও শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
যুদ্ধের আগেও আল-ফাখুরা স্কুলে কয়েকবার হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এর আগে, ২০০৯, ২০১৪ এবং চলতি বছরের শুরুর দিকেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্কুলটিতে হামলা চালায়। হামাসের সাথে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্কুলে হামলা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের হামলায় এই উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে শুধু শিশুই রয়েছে ৫ হাজারের উপরে। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজাকে শিশুদের জন্য মৃত্যুকূপ বলে অভিহিত করেছেন।