ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে জার্মানির অবস্থান জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসরায়েলকে রক্ষা করতে তারা দায়বদ্ধ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৩৪ PM , আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৩৪ PM

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর পাল্টা হামলা হিবেসে ইসরায়েল অসহায় শিশু ও বেসামরিক মানুষদের বেছে নিয়েছে। তাদের নৃশংস হামলায় নিহত হয়েছে ফিলিস্তিনের ৫ হাজারের অধিক নিষ্পাপ শিশু, নারী ৩ হাজারের অধিক এবং আরও কয়েক হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি। এছাড়া গাজার স্কুল, মসজিদ, বাড়ি-ঘর, হাসপাতাল, এমণকি শরণার্থী শিবিরও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে তাদের হামলায়।
গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার মাঝেই ইসরাইলের প্রতি জার্মানির দায়বদ্ধতার কথা জানালেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। একইসাথে জানালেন, গাজার বেসামরিক মানুষদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলোকে একত্রে এই সংঘাতের মীমাংসা করতে হবে। আন্তর্জাতিক মীমাংসা সূত্র তৈরি না হলে ইসরাইল-গাজা সংঘাত শেষ হবে না।’
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্বের ৫০ দেশে ইরানের চিঠি
কী এই আন্তর্জাতিক মীমাংসা সূত্র? বেয়ারবক ইউরোপের অন্য একটি সংঘাতের উদাহরণ টেনেছেন এই উত্তর দিতে। তার বক্তব্য, যেভাবে বলকান যুদ্ধের অবসান ঘটানো হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এই সংঘাতেরও সমাধান খুঁজে বার করতে হবে।
বেয়ারবক ইঙ্গিত দিয়েছেন যে- দুই দেশের তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। একমাত্র ওই তত্ত্বই গাজায় স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। তবে একইসাথে বেয়ারবক মনে করেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। যেভাবে হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়েছিল, তার প্রত্যুত্তর দেয়ার অধিকার ইসরাইলের আছে এবং সে কারণেই দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি সমর্থন করছে না জার্মানি।
বস্তুত, জার্মানি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ কেউই দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির দাবি করছে না। ইসরাইলের কাছে স্বল্প সময়ের বিরতির আবেদন জানাচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বেয়ারবক জানিয়েছেন, দীর্ঘ সংঘাত বিরতি হলে হামাস নিজেদের ফের ঐক্যবদ্ধ করে ফেলবে। হামাসকে কোনোভাবেই সে সুযোগ দেয়া যাবে না। সে কারণেই দীর্ঘ বিরতি সমর্থন করে না জার্মানি। তবে একই সাথে গাজার বেসামরিক মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চায় জার্মানি। তাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি, খাবার এবং ওষুধ যাতে তাদের কাছে পৌঁছায়, জার্মানি তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সে কারণেই স্বল্পমেয়াদী সংঘর্ষ বিরতি প্রয়োজন বলে মনে করে জার্মানি।
আরও পড়ুন:- জিম্মিদের মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে সমঝোতা করতে রাজি ইসরাইল
ইসরাইল নিয়ে জার্মানির অবস্থানও এদিন স্পষ্ট করেছেন বেয়ারবক। দেশে-বিদেশে জার্মানির অবস্থান নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে। বেয়ারবক বলেছেন, যারা সমালোচনা করছেন, তারা বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না। জার্মানি ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সমর্থক। ইহুদিদের জন্য আলাদা দেশের পক্ষে ছিল জার্মানি। সে দেশকে রক্ষা করতেও দায়বদ্ধ তারা। নাৎসি আমলে জার্মানিতে যেভাবে ইহুদিদের উপর অত্যাচার হয়েছে, সে প্রসঙ্গ টেনে এনে বেয়ারবক জানিয়েছেন, নাৎসি পরবর্তী জার্মানি ইহুদিদের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে দায়বদ্ধ।
তবে গাজায় সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও জার্মানি ভাবিত এবং সে কারণেই সাম্প্রতিক লড়াই শুরু হওয়ার পর তিনবার ইসরাইল গেছেন বেয়ারবক। ইসরাইলের সরকারের কাছে গাজার বেসামরিক মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন। সাধারণ মানুষের মৃত্যু কখনোই কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।