নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিতে আইসিসিকে দক্ষিণ আফ্রিকার আহ্বান
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:০৪ PM , আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:০৪ PM

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্ণবাদী ইসরাইলি সেনাদের পাশবিক হামলার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার একজন মন্ত্রী ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আটকাদেশ জারি করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার বিষয়ক মন্ত্রী খুম্বুদজো এনত্শাভেনি গতকাল (সোমবার) ওই আহ্বান জানানোর পর প্রিটোরিয়া থেকে নিজের রাষ্ট্রদূত এলি বেলোসেরকোভোস্তিকে তেল আবিবে ডেকে পাঠিয়েছে ইহুদিবাদী সরকার। দক্ষিণ আফ্রিকার ওই মন্ত্রী আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আটকাদেশ জারি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরাইল থেকে নিজের রাষ্ট্রদূতসহ সকল কূটনৈতিক স্টাফকে প্রত্যাহার করে নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা বারবার গাজায় ইসরাইলি হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করে আসছেন।
আরও পড়ুন:- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বাস্তুচ্যুত ১৭ লাখ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ
এনত্শাভেনি গতকাল প্রিটোরিয়ায় এক বক্তব্যে বলেন, “বিশ্ব গাজায় চলমান গণহত্যা চেয়ে চেয়ে দেখতে পারে না। বিশ্ব সমাজকে এই গণহত্যা বন্ধ করতে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।”
দক্ষিণ আফ্রিকার এই মন্ত্রী বলেন, নেদারল্যান্ডের হেগে নিযুক্ত তার দেশের রাষ্ট্রদূত ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য গত সপ্তাহে আইসিসির কাছে একটি আবেদন জানিয়েছেন। ওই আবেদনে দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি বাংলাদেশ, বলিভিয়া, জিবুতি ও কমোরোসেরও স্বাক্ষর রয়েছে।
এনৎশাভেনি বলেন, “বিশ্ব সমাজের বেশিরভাগ অংশ গাজায় এসব অপরাধযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করছে। বিশেষ করে গণহত্যার উস্কানি দিয়ে ইসরাইলি নেতাদের বক্তব্য কারো দৃষ্টি এড়ায়নি। কাজেই আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুসহ ওইসব [ইসরাইলি] নেতার বিরুদ্ধে অবিলম্বে গ্রেফতারি পরেয়ানা জারি হবে।”
আরও পড়ুন:- কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসতে পারে
দক্ষিণ আফ্রিকার এই মন্ত্রী বলেন, তার দেশের সরকার আশা করছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসি আটকাদেশ জারি করবে। তবে আন্তর্জাতিক আদালত তা করতে ব্যর্থ হলে তাকে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা বলে ধরে নেবে প্রিটোরিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের বর্বর হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স এমনকি শরণার্থী শিবিরেও হামলা শুরু করেছে। তাদের গণবিধ্বংসী হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার ৩০০ লোক মারা গেছে। এদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার।
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গাজার অর্ধেকের বেশি স্থাপনাই এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৭ লাখ মানুষ।