হঠাৎ কী কারণে পাকিস্তানে হামলা চালালো ইরান?

পাকিস্তান-ইরান
  © সংগৃহীত

প্রতিবেশী দুই মুসলিম দেশ পাকিস্তান ও ইরান। দেশ দুটির মাঝে খুব বেশি সুসম্পর্ক না থাকলেও এতো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এর আগে খুব কম হয়েছে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে কেন্দ্র করে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইরান থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার এবং ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। 

মঙ্গলবার পাকিস্তানে বেলুচি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ আল আদলের দুটি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে। 

ইরাক ও সিরিয়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর একদিন পর এই আক্রমণের ঘটনা ঘটল।

তেহরান ও ইসলামাবাদ প্রায়ই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, তারা জঙ্গিদের অন্যের ভূখণ্ড থেকে আক্রমণ চালানোর সুযোগ দেয়। তবে উভয় দেশের সরকারি বাহিনীর মধ্যে এ ধরনের হামলা বা সংঘাতের ঘটনা বেশ বিরল।  এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, মধ্যপ্রাচ্য রেখে হঠাৎ পাকিস্তানের ভূখণ্ডে কেন হামলা চালাল ইরান? 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ বিরুদ্ধে  ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে দেশটি। পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ইরানের এই হামলা চালানোর পেছনেও একই কারণ থাকতে পারে। 

২০১২ সালে জইশ আল আদল প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ইরানে কালো তালিকাভুক্ত একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলার জন্য জইশ আল আদলকে দায়ী করা হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে ইরানের রাস্কে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ইরানের অন্তত ১১ পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান। ওই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছিল জইশ আল-আদল। জাতিসংঘের দৃষ্টিতেও জইশ আল-আদল একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।

সম্প্রতি ‘সন্ত্রাসীদের’ স্থাপনা ও তাদের ‘গোয়েন্দা সদর দপ্তরে’ হামলা চালাচ্ছে ইরান। এ জন্য সিরিয়া ও ইরাকের কুর্দিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালানো হয়েছে।

হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে  সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বৈঠক করেছেন। 

এই বৈঠকের রেশ না কাটতে হামলার খবর সামনে এসেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এর পরিণাম গুরুতর হতে পারে।’

বুধবার বিকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বেলুচিস্তানে হামলার কারণে পাকিস্তান ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ফিরে যেতে বলেছে। তেহরানে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতকেও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।