মালয়েশিয়ায় আটক কেন্দ্রে দাঙ্গা; পালালো শতাধিক রোহিঙ্গা

মালয়েশিয়া
  © এএফপি

মালয়েশিয়ার একটি আটক কেন্দ্র থেকে মিয়ানমারের শতাধিক অবৈধ অভিবাসী পালিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে একজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। একটি বন্দিশিবিরে দাঙ্গার পর সেখান থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে যায় বলে খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমাঞ্চলীয় পেরাক রাজ্যের বিদোর অভিবাসী আটক কেন্দ্র থেকে মোট ১৩১ জন অবৈধ অভিবাসী পালিয়ে যায়।

আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ জানান, পালিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় এক অভিবাসীর মৃত্যু হয়। পালিয়ে যাওয়া অন্যদের ধরতে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে।

পেরাক পুলিশের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম মালয় মেইল জানিয়েছে, ওই ১৩১ জন আটক কেন্দ্রটির পুরুষ ব্লক থেকে পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ১১৫ জন রোহিঙ্গা নৃগোষ্ঠীর শরণার্থী ও ১৬ জন মিয়ানমারের অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর সদস্য। তাদের মধ্যে থেকে মারা যাওয়া লোকটি মহাসড়কে একটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল।  

অনেকদিন ধরেই মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার ও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠে মালয়েশিয়া। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহন করে নিয়ে যাওয়া নৌকাগুলোকে তাদের জলসীমায় ঢুকতে দিচ্ছে না। দেশটি সেখানে থাকা অবৈধ শরণার্থীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছে। এ ধরনের কয়েক হাজার শরণার্থীকে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক করে রেখেছে তারা।    

এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কেদাহ রাজ্যে ডিটেনশন সেন্টার ভেঙে ৫৮২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় মহাসড়ক ধরে পালানোর সময় গাড়ির ধাক্কায়  নিহত হয়েছিল ছয়জন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গা মুসলিমরা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতেও আশ্রয় নেয়।

অনেক রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যায়। আবার অনেকে থাইল্যান্ড সীমান্ত দিয়েও যাওয়ার চেষ্টা করে। অবৈধ পথে যাওয়ার পর তাদেরকে অনেক সময় বন্দিশিবিরে রাখা হয়। তবে বিভিন্ন অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের যে পরিবেশে রাখা হয় তা যথাযথ নয়।

গত বছর ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে সাগর পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার পথে অন্তত ৫৬৯ রোহিঙ্গা মারা গেছেন যা ২০১৪ সালের পর সর্বোচ্চ। মূলত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পথে ভ্রমণ করার সময় দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।