বিজ্ঞাপনে দেয়া কিউআর কোড স্ক্যান করলেই একাউন্ট থেকে টাকা উধাও!
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৭ PM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৭ PM

কিউআর কোড দেয়া আছে বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংয়ে আকর্ষণীয় মডেলের মুখের পাশে। এতে লেখা আছে কোড স্ক্যান করলেই স্বর্ণের গয়না কিনলে পাওয়া যাবে বিশাল ছাড়। কোনোটায় আবার সদ্য বাজারে আসা গাড়ি বা মোবাইলের ছাড়ের অফারের জন্য দেয়া আছে কিউআর কোড। তবে রাস্তায় দেখা এমন কোড স্ক্যান করলেই হচ্ছে বিপদ!
এমন কোড স্ক্যান করে প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি উধাও হচ্ছে ব্যাংকে জমা টাকাও। শুধু তাই নয় স্ক্যানের সঙ্গে সঙ্গেই বেহাত হচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্যও। এছাড়া এই প্রক্রিয়ায় মোবাইলের নিয়ন্ত্রণও নিচ্ছে সাইবার প্রতারকেরা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসা তথ্যমতে, এধরনের হোর্ডিং-বিজ্ঞাপনে বেশ চিন্তিত পুলিশ। নতুন বছরের প্রথম দু’মাসে এসংক্রান্ত অভিযোগ বেশ কয়েকটি। অভিযোগকারীদের বড় অংশের দাবি, পথে যেতে রাস্তার পাশে লাগানো বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং দেখে মোবাইলে কিউআর কোড স্ক্যান করেন তারা। এরপরেই কারো ব্যাংক একাউন্ট থেকে আড়াই লাখ টাকা, আবার কারো উধাও হয়েছে পাঁচ লাখ টাকারও বেশি।
একজন অভিযোগকারী বলেছেন, কোড স্ক্যানের পর নিজের অজান্তেই চালু হয়েছে ঋণ। পরে ঋণের কিস্তি না দেয়ার বিষয়ে ব্যাংক থেকে আসা চিঠি পেয়ে অভিযোগকারী জেনেছেন যে, তার নামে ঋণ আছে! মূলত ওই ব্যক্তি একটি বাড়ির বিজ্ঞাপন দেখে কিউআর কোড স্ক্যান করেন। পরে সেই বাড়ি কেনার জন্যই নাকি তার নামে ঋণের কাগজপত্র জমা হয়।
অপর এক ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, রাস্তার পাশে থাকা একটি প্রসাধনী সামগ্রীর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং দেখে তিনি কিউআর কোড স্ক্যান করেন। পরে তার মোবাইলটি অকেজো হয়ে যায়। তরুণীর কথায়, ‘কিছুই কাজ করা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, অন্য জায়গা থেকে আমার ফোনটা কেউ পরিচালনা করছে। পরে আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একাউন্ট দু’টিও হ্যাক হয়ে যায়।’
অপর একজন অভিযোগ, ‘হঠাৎ আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ দফায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা কেটে যায়। কিছু বুঝতে না পেরে পুলিশে অভিযোগ করি। কয়েকদিন পর থানা থেকে ডেকে জানতে চাওয়া হয়, কোনও কিউআর কোড আমি স্ক্যান করেছিলাম কি না। তখন মনে পড়ে, রাস্তায় আসার সময় একটি আসবাবপত্রের বিজ্ঞাপন দেখে আমি স্ক্যান করেছিলাম। পরে পুলিশ জানায়, সেটা থেকেই হয়েছে।’’
কলকাতা পুলিশ বলছে, এমন প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক করতে প্রচারে নামার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোকে ডেকে কথা বলা হচ্ছে। বড় বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলোর তালিকা তৈরি হচ্ছে। গত কয়েক মাসে কোন কোন সংস্থা তাদের সঙ্গে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য যোগাযোগ করেছে, তাও দেখা হবে। প্রতারণার এই ধরন একেবারে নতুন।’
এ বিষয়ে কলকাতার সাইবার গবেষক বিতনু দত্ত বলেন, ‘কিউআর কোড স্ক্যান করা মানেই সব কিছু বেহাত হয়ে গেল বা প্রতারিত হলাম, তেমনটা কিন্তু নয়। প্রতারকেরা কিউআর কোডের মধ্যে একটি লিঙ্ক দিয়ে রাখে। কোড স্ক্যান করে যদি মনে হয়, কোনো সন্দেহজনক লিঙ্ক খুলেছে, তাহলে আর এগোনো উচিত নয়। মোট কথা, যেকোনও কোড স্ক্যান করার আগে সতর্ক হতে হবে।’