নির্যাতন করেনি, তবে বাংলাদেশি নাবিকদের খাবার খেয়ে নিচ্ছে জলদস্যুরা!

জাহাজ
  © সংগৃহীত

ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকদের ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়নি এখন পর্যন্ত। তবে, জাহাজে থাকা তাদের সীমিত খাবারে ভাগ বসাচ্ছে দস্যুরা। ফলে দ্রুতই খাবার ফুরিয়ে আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া অস্ত্রের মুখে দস্যুদের সব কথা মেনে চলতে হচ্ছে বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে, যে কারণে মানসিক একটা চাপ ও ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে কাটছে তাদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) পরিবারের কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় এসব তথ্য জানান অপহরণের শিকার জাহাজের চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান। জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত ‘গ্যারাকাড’ নামক এলাকায় নোঙর করা আছে। জিম্মি নাবিকদেরকে জাহাজের ভিতরেই রাখা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে অবস্থান করছে ৬০-৭০ জন জলদস্যু।

পরিবারের কাছে পাঠানো অডিও বার্তায় আতিকুল্লাহ খান বলেন, ‘নাবিকদের সামনে দিয়ে দস্যুরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আশপাশে নেভি জাহাজ দেখলেই ওরা মাথায় অস্ত্র ঠেকাচ্ছে। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ওরা আমাদের জিম্মি করে রাখছে। আমি যেখানে ঘুমাই সেখানে পাশ ফিরলেই দেখতে পাই আমার দিকে বড় বড় মেশিনগান তাক করে রেখেছে। এই অবস্থায় ঘুম যা হওয়ার তাই হচ্ছে। মানসিকভাবে চাপে থাকলেও সুস্থ থাকার চেষ্টা করছি।’

জাহাজে থাকা খাবার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনও খাবার আছে। কিন্তু, জলদস্যুরাও আমাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করছে, আমাদের পানি ব্যবহার করছে। তাই এই খাবার আর কতদিন যাবে সেটা বলতে পারছি না। আর হয়তো ১০-১৫ দিন যেতে পারে। এরপর খাবার ও পানি শেষ হয়ে গেলে খুব কষ্টে পড়ে যাব।’

জলদস্যুরা এখনও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেনি জানিয়ে আতিকুল্লাহ খান অডিও বার্তায় আরও বলেন, ‘আজকে (বৃহস্পতিবার) আমরা সোমালিয়া এলাম। ওদের সঙ্গে আমাদের একটু ভালো সম্পর্ক হয়েছে। ওদের বলে কয়ে আমরা একটু কেবিনে এলাম। কিন্তু আবার ব্রিজে চলে যেতে হবে। সবাইকে দোয়া করতে বলো, আমরা যেন নিরাপদে আসতে পারি। আল্লাহ যেন আমাদের সময়টা সহজ করে দেন, রোজার উসিলায়।’