যে ৪ কারণে বাংলাদেশি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে

জলদস্যু
  © ফাইল ছবি

গত মঙ্গলবার ভারত মহাসাগর থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি বর্তমানে সোমালীয় উপকূলের একটি বন্দরে নোঙর করেছে বলে জানা গেছে। ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে যাচ্ছিল জাহাজটি। কিন্তু হামরিয়াহ বন্দরে যাওয়ার পথেই গত মঙ্গলবার সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। এ সময় জিম্মি করা হয় ২৩ নাবিকসহ পুরো জাহাজটি। জিম্মিদের মুক্তিপণ হিসেবে জলদস্যুরা ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে বলে জানা গেছে।

জাহাজটি ভারত মহাসাগরের যে পথ পাড়ি দিচ্ছিল তা ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কিংবা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কোনোটিই ছিল না, এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। কারও কারও মতে, পরিকল্পিতভাবেই ছিনতাই করা হয়েছে জাহাজটিকে।

তবে চার কারণে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। এমনটি মনে করেন, মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, দস্যুতারোধে চিহ্নিত এলাকায় আন্তর্জাতিক বাহিনীর টহল ছিল না। কম গতিতে চলছিল জাহাজটি। জাহাজের ড্রাফট (জাহাজের নিচের যে অংশ ডুবে থাকে) বেশি ছিল। ঘাটতি ছিল কাঠামোগত নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও।

মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুরা নরমালি তা ট্র্যাকিং করে। যারা এগুলোর সাথে জড়িত তারা জাহাজের রুট সম্পর্কে জানে এবং জাহাজকে মনিটর করে সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, সচরাচর কম ড্রাফট আর দ্রুতগতির জাহাজ আক্রমণ করে না দস্যুরা। কিন্তু, এমভি আবদুল্লাহ ছিল বেশি ড্রাফট আর কম গতির জাহাজ। সেইসাথে ছিল না বাড়তি নিরাপত্তা। ফলে জাহাজটিতে সহজেই উঠে পড়ে জলদস্যুরা।

মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলদস্যুদের ঠেকাতে এক সময় আন্তর্জাতিক বাহিনীগুলো বেশ সক্রিয় ছিল ভারত মহাসাগরে। কিন্তু, লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের তৎপরতার কারণে এখন সবার মনোযোগ সেদিকে। ফলে, টহল শিথিল হয়ে পড়ায় ভারত মহাসাগরে আবার বেপরোয়া সোমালীয় দস্যুরা।

গেল তিনমাসে ১৪টি জাহাজ ছিনতাই করে দস্যুরা। যা ছয়বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার বলে মনে করেন নৌবাণিজ্য দপ্তরের নৌবাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ।