নিজ দেশ ও মুসলিম বিশ্বের তোপের মুখে সুর বদলালো জর্ডান!

জর্ডান
  © ফাইল ছবি

গত ১৩ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালায় ইরান। তবে ইসরায়েলে লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকিয়ে দেয় জর্ডান। এর পর থেকেই নিজ দেশ এবং মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। দেশটি আত্মরক্ষার জন্য এ পদক্ষেপ নিলেও সে ব্যাখ্যা নিজ দেশের মানুষই আমলে নিচ্ছে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এবার সুর বদল করেছে জর্ডান সরকার। ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার জন্য এবার ইসরায়েলকে দায়ী করল জর্ডান। ইরানের হামলার চার দিন না পেরোতেই নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করে এ অভিযোগ তুলেছে দেশটি।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি গত মঙ্গলবার বার্লিনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেন। আয়মান বলেন, বিশ্বের উচিত নেতানিয়াহুকে থামানো। কারণ বর্তমান উত্তেজনা বাড়ানোর পেছনে তিনিই দায়ী। 

জর্ডানের এ নেতা আরও বলেন, সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলায় কর্মকর্তা নিহতের প্রতিশোধ নিয়েছে দেশটি। ইরান বলেছে, তারা আর কোনো সংঘাতে যেতে চায় না। নতুন করে উত্তেজনাও বাড়াতে চায় না; কিন্তু নেতানিয়াহু এটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে চাইছেন। এ কাজে ইরান ইস্যু ব্যবহার করা হচ্ছে। 

এছাড়া জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয় বলেছেন, তার দেশ কখনো ‘আঞ্চলিক যুদ্ধের মঞ্চে’ পরিণত হবে না। অন্য সবকিছুর আগে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে জর্ডান বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করেন বাদশাহ। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে হামলা থেকে রক্ষার চেয়ে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষাই ছিল জর্ডানের মূল উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য, তেহরানের ওই হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের সঙ্গে যুদ্ধময়দানে প্রকাশ্যে যুক্ত হয় মুসলিম দেশ জর্ডানও। তারা ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের একটি অংশ ভূপাতিত করে। ইসরায়েলকে ওই সহযোগিতার পর জর্ডানের সাধারণ নাগরিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তারা তাদের সরকারকে বেইমান উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। সেখানে ইসরায়েলের পতাকা জড়ানো জর্ডান বাদশাহর ছবি ছড়িয়ে দিয়ে তাকে ধিক্কার জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। 

জর্ডানিরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করে তাদের সরকার বেইমানি করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় নির্যাতিত মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যারা কয়েক মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন, তারা খুবই মর্মাহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, জর্ডানের রানি রানিয়াসহ দেশটির বেশিরভাগ মানুষ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। ইরানের হামলা ঠেকানোর বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না।


মন্তব্য