ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ

গাজা
  © ফাইল ফটো

গাজা যুদ্ধের সমালোচনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের জন্য গত সপ্তাহে প্রায় ৫৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্যাম্পাসের অর্থায়ন বিচ্ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, জর্জিয়ার আটালান্টায় অবস্থিত এমোরি ইউনিভার্সিটিতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে। এমনকি নারী এক অধ্যাপককে গায়ের জোরে মাটিতে ঠেসে ধরে হাতকড়া পরায়। এমোরি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারোলাইন ফোলিন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কথা বলতে গেলে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা তার ওপর চড়াও হন এবং চোখের পলকেই তাকে মাটিতে শুইয়ে ফেলেন।

ইউনিভার্সিটির আটালান্টা ক্যাম্পাসে গত বৃহস্পতিবার তাবু গেঁড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীসহ অন্যরা। এ সময় পুলিশ সেখানে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর সবাই মিলে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। 

বিক্ষোভের লাগাম টেনে ধরতে কলেজ প্রশাসকদের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলছেন আইনপ্রণেতারা। বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল কলম্বিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের বিষয়ে গতকাল শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) রাতে সিনেটে প্রস্তাব পাস হয়েছে। বিক্ষোভের উত্তেজনা এরই মধ্যে ইয়েল, এমআইটি ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অননুমোদিত শিবির স্থাপনে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র। 

কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, কলম্বিয়ার ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয়ায় প্রায় সব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন: হেলিকপ্টারের আসনে বসতে গিয়ে পড়ে গেলেন মমতা

ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো ডেনভার, কমিউনিটি কলেজ অব ডেনভার এবং মেট্রোপলিটন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের যৌথ ক্যাম্পাস থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজনকারী প্রায় ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকেই  গতকাল শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে সংঘটিত সহিংস গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছেন। অধ্যাপকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট গ্রেগরি ফেনভেসকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়ার জন্য রাজ্য ও স্থানীয় পুলিশকে ডেকে আনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

গত শক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বর্তমান শিক্ষার্থী যদি ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন, তবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে এবং প্রশাসনিকভাবে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হবে।  এ ছাড়া ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও চ্যাপেল হিলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনাসহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছে ফিলিস্তিন পন্থীরা। 


মন্তব্য