স্মরণকালে ভারী বৃষ্টি ও বন্যার পর যেভাবে স্বাভাবিকতায় ফিরলো আমিরাত

আরব আমিরাত
  © ফাইল ছবি

মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত ১৬ এপ্রিল দেশটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। ১৯৪৯ সালের পর গত ৭৫ বছরে এইবারই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে দেশটিতে। এতে বন্যার কবলে পড়ে দেশটি। তবে সব ধরনের বিপর্যয় সামাল দিয়ে স্বাভাবিকতায় ফিরে এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাঁচ দশক আগে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পর এই প্রথম রেকর্ড সর্বোচ্চ ঝড়োবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার সাক্ষী হয় আরবের অন্যতম ধনী এই দেশটি। খবর গালফ নিউজ। 

মুষলধারে ভারী বৃষ্টিপাত, বজ্রঝড় ও শিলাবৃষ্টির পর মরুর দেশটিতে দেখা যায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এতে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অধিকাংশ বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিপর্যয় হয়, আটকা পড়ে লাখো যাত্রী। দুবাইয়ের রাস্তায় বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আটকা পড়ে হাজারো গাড়ি, দোকানপাট, শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে পড়ে। মেট্রোরেল স্টেশনে দেখা যায় হাঁটু সমান পানি। এমন কি মেট্রোরেলের ট্র্যাকও ডুবে যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। 

১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া তুমুল এ ঝড়োবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় দুবাইসহ পুরো আরব আমিরাতে অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি দেখা দেয়। ৭৫ বছরের মধ্যে এ প্রথমবারের মতো মরুর দেশে দেখা দেয় প্লাবনের মতো জলাবদ্ধতা। মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসার নগরী ব্যস্ত শহর হিসেবে পরিচিত দুবাইও হয়ে পড়ে অনেকটা স্থবির।

তবে স্বস্তির বিষয় মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বাসিন্দারা কাজে যোগ দিতে দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে শুরু করে। সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এমনটি সফল হয়। আমিরাতের পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বিত কর্মযজ্ঞের কারণে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় জরুরী, সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনসিইএমএ) জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের মাঠপর্যায়ের দলগুলো ন্যাশনাল গার্ড কমান্ড এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিস্থিতি মোকাবিলা নিরন্তর কাজ করে। পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পাশাপাশি গোটা আমিরাতে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে তাদের প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এনসিইএমএ-এর যৌথ প্রচেষ্টায় ন্যাশনাল সেন্টার অফ মেটিওরোলজি এবং ন্যাশনাল গার্ড, ফেডারেল এবং স্থানীয় অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভয়াবহ এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে। 

সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের সহায়তায় আমিরাত সরকার দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেয়। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয় সরকার।

বিশাল এই কর্মযজ্ঞের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুই লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ফোন কল গ্রহণ করে। এতে সরাসরি যুক্ত ছিল ৯৭টি সংস্থা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৭ হাজার সদস্য সরাসরি কাজ করেছেন। স্থানীয় দপ্তরের ১৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। নিবন্ধিত সাড়ে পাঁচশ সেচ্ছ্বাসেবক, ১৬১ টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ৫ হাজার যানবাহন ও ভারী যন্ত্র এতে যুক্ত ছিল।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ